যমুনা নদীর ভাঙন থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম গাইড বাঁধ রক্ষা করা প্রকল্পের ব্যয় ১০৮ কোটি ২১ লাখ টাকা বেড়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধার করা ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা’ প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন করা হয়েছে।

প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একনেকে প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে করোনার কারণে আগের ব্যয় রেখেই প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারায় এটি গত মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) একনেকে প্রথম সংশোধন করে মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পাশাপাশি ১০৮ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৩৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। এটি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত আছে।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- যমুনা নদীর ভাঙন থেকে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম গাইড বাঁধ রক্ষা করা, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সিরাজগঞ্জ লঞ্চঘাট এবং শহরের বিয়ারা ঘাট, ঘোনাপাড়া ও সায়দাবাদ এলাকার কৃষি জমি, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করা, নদীর গভীরতম স্রোতধারা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা, নদী ভাঙন প্রতিরোধের মাধ্যমে এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, নদীর তীর রক্ষার মাধ্যমে পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পুনরুদ্ধার করা ভূমি ড্রেজিং করা মাটির মাধ্যমে ভরাট করা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে ৩ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ, নদী ড্রেজিং করে ১৮২ লাখ ঘনমিটার পুনরুদ্ধার করা ভূমি উন্নয়ন, ৩ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ এবং ৮৪ মিটার আর্চ ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পানি সম্পদ সেক্টরের অন্যতম উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে নদী তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ পুনর্বাসন করা। যার সঙ্গে প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ।

প্রকল্প সংশোধনের কারণে বলা হয়েছে, মাটির বাঁধ নির্মাণ ও নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের পরিমাণ হ্রাসকরণ (৩.২০ কিলোমিটার থেকে ৩.০০ কিলোমিটার নির্ধারণ), ভূমি উন্নয়ন খাতে মাটি ভরাটের পরিমাণ বৃদ্ধিকরণ (১৫০.২৫ লাখ ঘনমিটার থেকে ১৮২ লাখ ঘনমিটার নির্ধারণ) এবং প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি পাওয়া।

পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যমুনা নদী থেকে পুনরুদ্ধার করা ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করা যাবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল, গাইড বাঁধ এবং প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের জানমাল রক্ষা বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসআর/এমএইচএস