মিশর থেকে ভাড়ায় আনা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের লিজ প্রক্রিয়ায় জড়িত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওই সময়ের কর্মকর্তাদের তলব করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। 

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক থেকে আগামী বৈঠকে তাদের হাজির নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিশরীয় দুটি বিমান লিজ নেওয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থিত হতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করা হয়। 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মিশরের ওই উড়োজাহাজ ভাড়া নেওয়ার সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের সবাইকেই ডেকেছে এ সংক্রান্ত কমিটি।

পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে। এক বছরের কম সময়ের ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন।

দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে নষ্ট হয়ে যায় ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও। ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে লিজ নেওয়া ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে।

গত বছরের অক্টোবর মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের পেছনে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমানের নিট ক্ষতি হয়েছে ১১শ কোটি টাকা। ওই বৈঠকে জানানো হয়, এ উড়োজাহাজ দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২২শ কোটি টাকা, আর ওই দুটির পেছনে খরচ হয়েছিল ৩৩শ কোটি টাকা। 

ওই দুটি উড়োজাহাজের জন্য প্রতিমাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। সেই দায় থেকে ওই বছরের মার্চ মাস হতে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে।

গত দশম সংসদের বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এ বিমান দুটি লিজ নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান, শেখ তন্ময়, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, কানিজ ফাতেমা আহমেদ প্রমুখ। 

এইউএ/এসএম