ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আওতাধীন ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে ভূগর্ভস্থ লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ

পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৩৫৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে এক হাজার ২৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। 

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কাওসার আমিন জানান, ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ায় ডেসকো এলাকাভুক্ত উপ-কেন্দ্র এবং সব বৈদ্যুতিক লাইন ওভারলোডেড অবস্থায় আছে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে লো-ভোল্টেজ এবং সিস্টেম লসের পাশাপাশি নতুন গ্রাহকদের মানসম্মত বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে সমস্যা হচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নতুন গ্রিড, বিতরণ উপকেন্দ্র স্থাপন এবং লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ডেসকোর বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, প্রকল্পটির মোট প্রস্তাবিত ব্যয় দুই হাজার ৩৫৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪৬৩ কোটি ৮৪ লাখ, ডেসকোর অর্থায়ন ৬১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাকি এক হাজার ২৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা দেবে এডিবি। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় ডেসকো এলাকায় ৩৩ কেভি এবং ১১ কেভি ক্ষমতার যথাক্রমে ৫০ ও ১০০ সার্কিট কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইন স্থাপন করা হবে। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী শহর এলাকায় ভূগর্ভস্থ লাইন স্থাপনের ক্ষেত্রে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এজন্য সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এলাকায় ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণে প্রস্তাবিত রুটে রাস্তা খননের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ বিষয়ে ডেসকোর নির্বাহী পরিচালক মো. মনছুরুল আলম জানান, সিটি করপোরেশনকে ইতোমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্য রুটের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে অনুমতি পাওয়া যায়নি। প্রস্তাবিত রুটে ভূগর্ভস্থ লাইন স্থাপনের জন্য সিটি করপোরেশনের অনুমতির প্রয়োজন হবে। প্রকল্পের আওতায় এয়ারপোর্ট এলাকাসহ আটটি স্থানে নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ছায়েদুজ্জামান বলেন, প্রকল্পটির জন্য ডেসকো কর্তৃক পৃথক কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। ডেসকোর মাস্টার প্ল্যান ২০৩০-এর রিভিউ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে। কোন কোন বিকল্প পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি কারিগরি এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক দেখানো হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও সমীক্ষা হালনাগাদ করে তা এনইসি-একনেক ও সমন্বয় অনুবিভাগ কর্তৃক প্রণীত ফরম্যাটে ডিপিপিতে যুক্ত করা দরকার।

এসআর/আরএইচ