করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া বিদেশ থেকে যাত্রী আনা এয়ারলাইন্সকে বিভিন্ন মেয়াদে ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত (সাসপেন্ড) রাখবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

রোববার (১৩ নভেম্বর) এ বিষয়ে সতর্ক করে একটি নির্দেশনা জারি করেছে বেবিচক। নির্দেশনায়, কোভিড সার্টিফিকেট ছাড়া যাত্রী আনলে কিংবা কোভিড আক্রান্ত যাত্রী বহনে এয়ারলাইন্সকে বিভিন্ন মেয়াদে ফ্লাইট স্থগিতের মতো শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে কয়েকটি এয়ারলাইন্স যাত্রীদের পিসিআর নির্ভর কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া যাত্রী বহন করছে। কেউ কেউ করোনা আক্রান্ত যাত্রীও বহন করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কোভিড মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বেবিচক সব এয়ারলাইন্সকে আন্তর্জাতিক যাত্রী বহন সংক্রান্ত গত ৬ ডিসেম্বরের সার্কুলারটি মেনে চলার নির্দেশনা দিচ্ছে। তবে কোনো এয়ারলাইন্স যদি এ নির্দেশনা না মানে তবে তাদের ফ্লাইট চলাচলে বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে।

কোভিড সার্টিফিকেট ছাড়া বা কোভিড আক্রান্ত যাত্রী বহন করলে প্রথমবারের শাস্তি হিসেবে সেই এয়ারলাইন্সের একটি সিডিউলড ফ্লাইট স্থগিত করা হবে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে ৩টি সিডিউলড ফ্লাইট তৃতীয়বারে ১ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হবে। এছাড়াও চতুর্থবার এ অপরাধ করলে এয়ারলাইন্সটির ফ্লাইট কমপক্ষে ৪ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হবে।

আদেশটি রোববার (১৩ ডিসেম্বর) রাত থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার করোনা সার্টিফিকেট ছাড়া ৬ যাত্রী বহন করায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট। একইদিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত এক রোগীকে বহন করে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আনায় এয়ার এশিয়াকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার একই কারণে মালদিভিয়ান এয়ারলাইনসকে দুই লাখ ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

গত ৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) এক বিজ্ঞপ্তিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ঘোষণা করে, ৫ ডিসেম্বর (শনিবার) থেকে যারাই বাংলাদেশে আসতে চাইবে, তাদের অবশ্যই করোনার নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে ফ্লাইটের সময় থেকে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা আগের সনদ গ্রহণযোগ্য হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সতর্কতার অংশ হিসেবে এ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বেবিচক।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া এবং অবতরণ করা প্রতিটি এয়ারলানসকেই বেবিচক নির্দেশনা দিয়েছে, কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ ছাড়া যেন কোনো যাত্রীকে বোর্ডিং পাস না দেওয়া হয়।

সম্প্রতি করোনার নেগেটিভ সনদ ছাড়া দেশে আসা যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। গত নভেম্বরে ৪ হাজারেরও বেশি যাত্রী কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ ছাড়া দেশে এসেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দেশে আসা যাত্রীদের করোনা সনদ থাকা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে।

এআর/এসএম