যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, নদীপথে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষ চলাচল করতে পারবে এমন একটি স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন মানুষ আমাদের মাঝে আছেন। 

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কামরাঙ্গীরচরের শেখ জামাল স্কুলের সামনে তিনি এ কথা বলেন। সন্ধ্যায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. আতিকুল ইসলাম, সাংসদ হাজী মো. সেলিম, স্থানীয় কাউন্সিলর প্রমুখ।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর সোয়ারী ঘাট ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ শুরু হয়। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শুরু হয়ে নৌকা বাইচ চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। 

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজিত এ নৌকা বাইচের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম প্রমুখ।

গ্রামে বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই নৌকা বাইচ হয়। তবে রাজধানীতে এই সংস্কৃতি প্রায় বিস্মৃতির পথে। ফলে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে বুড়িগঙ্গা নদীর দুই প্রান্তে হাজার হাজার মানুষের সমাগম দেখা গেছে। 

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ পাঁচশ-এক হাজার মানুষকে আশ্রয় দিতে ভয় পায়। সেখানে তিনি লাখ লাখ উদ্বাস্তু মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজকে যে নদীতে নৌকা বাইচ হচ্ছে, এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। প্রধানমন্ত্রী চান আমাদের রাস্তায় যেভাবে যোগাযোগ উন্নয়ন হবে, ঠিক সেভাবেই নদীপথের যোগাযোগ উন্নয়ন হবে। নদীর যে ব্রিজগুলো নিচু ছিল সেগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ তিনি করতে যাচ্ছেন। নিজস্ব অর্থায়নে তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহস দেখিয়েছেন। আজকে নদীর নিচে টানেল হয়, আকাশের উপর ট্রেন চলে। যে জিনিসগুলো আপনারা কখনো কল্পনা করেন নাই, শুধুমাত্র টেলিভিশনে দেখেছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করেছে তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করব যেন আল্লাহ তাকে মানুষের জন্য বেশি বেশি ভালো কাজ করার তৌফিক দান করেন। বাংলাদেশ খাল-বিলের দেশ। বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে নৌকা নেই। গ্রামেগঞ্জে নৌকা বাইচ এখনো অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। কিন্তু শহরের সেই ধরনের আয়োজন কখনো করতে পারিনি। অবশেষে দুটি আয়োজন বিআইডব্লিটিএ করতে পেরেছে, এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, যারা নদী দখল করে, খাল দখল করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ডেভেলপাররা বড় বড় ড্রেজার লাগিয়ে দেয়। তারা ড্রেজার লাগিয়ে উত্তর দক্ষিণ পূর্ব-পশ্চিম সব ভরাট করে ফেলে। আজকে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আপনাদের কাছে একটাই কথা, আমাদের খেলার মাঠ, নদী-খালে দখল করবেন না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর বুড়িগঙ্গাকে ধরে রাখতে হবে। শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালুসহ সমস্ত নদীকে ধরে রাখতে হবে। ৬০ ফিটের পরে কালশী খাল দখল করে হয়ে গেছে ৫ ফিট। এসব দখল করেছে কারা, আমরাই এরকম করেছি। খালগুলো থাকলে সেখানে বুড়িগঙ্গার মতো আমরা আজকে নৌকা বাইচ করতে পারতাম। আমরা চাই, আমাদের খালগুলোতে আবারও নৌকা বাইচ হবে। আমাদের খালগুলোতে আবারও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চলতে হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমরা যেন নদী এবং খালগুলোকে দূষণ এবং দখল না করি।

বিআইডব্লিউটিএ-র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে, বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার কন্যা গত কয়েক বছর দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি দেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়, যা নিয়ে আমরা বিশ্বে গর্ব করতে পারি। তাই আজকের এই অনুষ্ঠান আমরা উৎসর্গ করছি তার প্রতি। তিনি যে আমাদের ২০৪১ সালের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, সে পর্যন্ত জীবিত থেকে কাজগুলো যেন করতে পারেন।

এমএইচএন/এইচকে