সম্প্রতি অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী আবদুল কাদের নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ধনকুবের মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ডিবি। এজন্য মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে।

সেখানে কাদেরের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে মুসা বিন শমসেরকে। প্রতারক এই আবদুল কাদের ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের আইন উপদেষ্টা ছিলেন বলেও পরিচয় দিতেন।

এ বিষয়ে ডিবির উপ-কমিশনার (ডিসি-গুলশান) মশিউর রহমান সোমবার ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার তার (মুসা বিন শমসের) ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার মুসাকেও ডাকা হয়েছে। তাকে প্রতারকের বিষয়ে কিছু প্রশ্ন করা হবে।

ডিবি সূত্র জানায়, মুসার বয়স বর্তমানে ৭৭ বছর। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এছাড়া তিনি করোনার টিকা নেননি। অসুস্থতার কারণে তাকে সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করা হয়নি। তবে তাকে মঙ্গলবার দুপুরের খাবার শেষ করে কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। আসা, না আসার বিষয়ে তিনি কোনো নিশ্চয়তা দেননি। তবে ডিবি ধারণা করছে, প্রতারণার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি হাজির হবেন।

সম্প্রতি আব্দুল কাদের চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এ বিষয়ে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতারক আব্দুল কাদের নিজেকে ধনকুবের প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের প্রতিষ্ঠান ড্যাটকোর লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের নগদ অর্থ ও বিভিন্ন স্থাপনার কাস্টোডিয়ান হিসেবে টাকা-পয়সা কোনো ব্যাপার না বলে জাহির করতেন। এভাবে চাকরিপ্রার্থী, ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের প্রতারিত করতেন। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।

ডিবি জানায়, গ্রেফতার হওয়া আব্দুল কাদের চৌধুরী তার নিজস্ব দালাল এবং মিডিয়া ম্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ, বড় অঙ্কের ঋণ প্রদান, ওয়ার্ক অর্ডার, সাব-কন্ট্রাক্ট, ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রসেসিং করতেন। তাদের আকৃষ্ট করার জন্য ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের পরিচয়, ভুয়া সিআইপি, দামি দামি গাড়ি, বডিগার্ড ও ওয়্যারলেস সেট ইত্যাদি ব্যবহার করতেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া ভুয়া কার্যাদেশ, মুসার সঙ্গে তোলা ছবি ও লেনদেনের ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করতেন। সচিবসহ ৩৩ জন উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে তার কনসোর্টিয়াম, ব্যবসা আছে ইত্যাদি প্রচার করতেন।

এআর/এসএম/জেএস