ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া শিমুলতলার ‘দি ভাই ভাই ফার্নিচারে’ কাজ করতেন রমজান মিয়া (১৯)। গত ১ অক্টোবর কাজ শেষে মোল্লা বাজারে ভাড়া বাসায় ফেরার পথে পলমল গার্মেন্টসের সামনে ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়েন তিনি।

মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে বাধা দেওয়ায় ধারালো ছুরি দিয়ে রমজানের বুকে, পেটে এবং সরু রড দিয়ে গলায় আঘাত করে ছিনতাইকারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রমজান। 

পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের খালা মোসাম্মৎ কুলসুম বেগম (২৩) অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও সক্রিয় ছিনতাইকারী দলের হোতা ও সহযোগীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দল।

গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন : মূলহোতা আমিনুল (২৮), সহযোগী সাগর মোল্লা (২৮) ও মো, ইউনুছ (৩৫)।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এলআইসির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, গত ১ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়ার পলমল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সামনে রমজান মিয়াকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। আর্থিক অনটনের সংসারে জীবিকার তাগিদে প্রায় ৬ বছর আগে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। রমজান মিয়া তার খালার সঙ্গে আশুলিয়ার জামগড়ার মোল্লা বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে থেকে তিনি ‘দি ভাই ভাই ফার্নিচার’ দোকানে ১১ হাজার টাকা বেতনে প্রায় ৩ বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন। তাকে হত্যার পর ঘটনাটি গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ ও গভীরভাবে বিশ্লেষণে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।

রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে এলআইসি শাখার একাধিক টিম হত্যার ঘটনায় সরাসরি নেতৃত্বদানকারী মো. আমিনুলকে জামগড়া থেকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর দুই সহযোগী সাগর মোল্লাকে রাজধানীর মুগদা ও আশুলিয়ার জিরানী থেকে মো. ইউনুছকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে নিহত রমজানের মোবাইল এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা জানায়, তিনজনই সক্রিয় ছিনতাইকারী দলের সদস্য। আশুলিয়াসহ আশপাশের এলাকায় গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পথচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাই করে। বাধা পেলে ধারালো ছুরি, লোহার রড দিয়ে আঘাত করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে তারা। 

জেইউ/এসকেডি