‘জীবন উপভোগ করতে না পারা আরেক ধরনের মৃত্যু’- এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি ঝরে পড়া ও পথ শিশুদের জীবন নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

মোমেন বলেছেন, রাসেল দিবসের অঙ্গীকার হোক প্রতিটি শিশুটি যেন আরও উন্নত জীবন পায়।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শিশুদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু দুখের বিষয় দেশে প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু এখনও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না। কিংবা একটা বিরাট সংখ্যক শিশু ঝরে পড়ে। একটি বড় অংশ পথ শিশু হয়ে জীবন কাটাচ্ছে। আমরা কীভাবে আমাদের এসব ছেলেমেয়েদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি তা নিয়ে ভাবতে হবে।’

প্রতিটি শিশুকে উন্নত জীবন দেওয়ার চেষ্টা চালানো হবে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘দেশের যত শিশু আছে প্রত্যেককে আমরা স্কুলিং দেবো, কিংবা তাদের কেয়ারে আরও সজাগ হবো। আমরা চাই, আমাদের শিশুরা জীবন উপভোগ করার সুযোগ পাক। সে বিষয়ে আমরা মনোযোগী হবো।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পথ শিশুদের নিয়ে বই লিখেছেন। প্রতিটি শিশুর জন্য তার খুব দরদ। 
রাসেলের মতো আর কোনো মায়ের যেন বুক খালি না হয় দেশবাসীকে সেই অঙ্গীকার করাও আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ রাসেল দিবসে আমাদের প্রত্যেকেরই চিন্তা করা উচিত কোনো মায়ের বুক যেন কখনও খালি না হয়। আমরা চাই কোনো নিরপরাধ লোক যেন মারা না যায়। প্রত্যেক মা-বাবা যেন তার শিশুকে নিয়ে গর্ব করতে পারে। আজকের দিনে সেই প্রতিজ্ঞাই হোক।’

বাংলাদেশের শিশু মৃত্যু হার নিয়ে বিশ্বের প্রশংসা করা উচিত বলেও মনে করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব ভাগ্যবান, আগামী ১০-১৫ বছর আমাদের গ্রোথ রেট ভালো থাকবে। আমাদের শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। কয়েক বছর আগে প্রতি হাজারে ২৫০ শিশু মারা যেত। আর এখন ২৬ জনের মতো মারা যায়। আমরা শিশু মৃত্যু দশগুণ কমিয়েছি। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমাদের বার্থ রেট অনেক কমেছে, এটা সাফল্য।’

এ সময় শিশুদের জন্য সরকারের কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক স্কুলে মোটামুটিভাবে রাসেল ডিজিটাল সেন্টার তৈরি করেছি। সেখানে সব ছেলেমেয়েরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে শিখছে। প্রতিটি শিশু যেনো আরও উন্নত জীবন পায়, সেজন্য সারাদেশে ১৪ হাজারের মতো কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস চালু করেছি। সেখানে শিশুদের মায়েরা সেবা নেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি জাদুঘর এবং ট্রাস্টের সদস্য কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।

এনআই/এমএইচএস