সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা ভুল বা মিথ্যা তথ্য সম্বলিত কনটেন্ট প্রচার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) সদরদফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশে এবং বিদেশে বসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে চক্রান্ত ও চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কনটেন্ট ছড়িয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, চক্রটি পূর্বে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার ভিডিও কনটেন্ট সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিডিও বলে প্রচারের চেষ্টা করছে৷ এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশের একটি অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে রংপুরের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিডিও বলে প্রচারের চেষ্টা করেছে। এ সংক্রান্ত তথ্য ও ভিডিও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র‌্যাবও সোচ্চার রয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, যারা বিভিন্ন মন্দিরে পূজামণ্ডপে হামলা সরাসরি জড়িত, যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া ভিডিও ও কনটেন্ট আপলোড করেছন, যারা ভিডিও কনটেন্টগুলো শেয়ার করছেন, এবং যারা বিভিন্ন ধরনের অযাচিত মন্তব্য করছেন, যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ করেছন, র‍্যাব তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, রংপুর, চট্টগ্রাম, রূপগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র‍্যাব অভিযান চালিয়েছে। এ ধরনের ঘটনার মূলহোতা ও পেছন থেকে ইন্ধন দেওয়া অন্তত ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

তিনি বলেন, একটি চক্র জেনেশুনেই প্রচার করছে। আবার কেউ কেউ স্বার্থ হাসিলের জন্য ভিডিও কনটেন্ট শেয়ার ও প্রচার করছে। এ ধরনের বেশি কিছু পেজের অ্যাডমিনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার দিচ্ছেন, তাদেরও শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। 

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার এ পরিচালক বলেন, গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনায় মূল যে কালপ্রিট, তাকে গ্রেফতারের খুব কাছাকাছি আছি। র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। যারা মিথ্যা তথ্য সম্বলিত কনটেন্ট, ভিডিও ও গুজব প্রচার করছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিচ্ছে বা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারা যে শ্রেণিরই লোক হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, অভিযান চলছে। 

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অনুরোধ জানাবো, আপনারা যা করবেন জেনে শুনে বুঝে করবেন। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে না জেনে না বুঝে কোনো ধরনের লাইক, কমেন্টস করবেন না, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয় এমন কিছু করবেন না। কারণ আপনাদের লাইক, শেয়ার, কমেন্টস কিংবা ভিডিও কনটেন্ট প্রচারে আরও অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হবে৷ অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়বে৷

তিনি বলেন, যারা ভুল তথ্য বা কনটেন্ট প্রচার করছেন, তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, যারা এ ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেইউ/আরএইচ