মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‌‘মানসিক স্বাস্থ্য : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল টক শোতে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন, ২০১৮-১৯ সালের জরিপে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ১৭ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক ও ১৩.৬ শতাংশ শিশু নানাবিধ মানসিক রোগে আক্রান্ত। করোনা পরিস্থিতির কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য শুধু করোনাকালীন নয়, বরং সবসময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এ ক্ষেত্রে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সক্রিয় জীবন যাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, সামাজিক সম্প্রীতি, গণপরিসরগুলোর সৌন্দর্য বর্ধনে সীমাবদ্ধ না থেকে সকলের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণ, আবাসনগুলো এমনভাবে তৈরি করা যেন খেলাধুলার জন্য যথেষ্ট পরিসর পাওয়া যায়, সড়কগুলোতে খেলাধুলার সুযোগ তৈরি ইত্যাদি উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক।

তারা বলেন, এ ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ অনুসরণে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করা যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসার পরিবর্তে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কর্মসূচি, গবেষণা, এডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। করোনা সংক্রমণের পরেই মানসিক স্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে হলে একদিকে যেমন শারীরিক স্বাস্থ্যে গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনি আচরণগত পরিবর্তনও প্রয়োজন। পাশাপাশি যারা ইতোমধ্যে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তারা যেন যথাযথ সেবা পান তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে মন খুলে কথা জরুরি এবং এজন্য প্রয়োজন বন্ধু। বন্ধু তৈরির ক্ষেত্রে খেলাধুলার জায়গা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবাসন প্রকল্পগুলো গ্রহণের ক্ষেত্রে খোলা জায়গাকে প্রাধান্য দেওয়া ও বর্তমান মাঠ-পার্কগুলোকে সবার জন্য প্রবেশগম্য করে তোলা প্রয়োজন।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা নাঈমা আকতারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সার্ভিসের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ খন্দকার এম আনসার হোসেন, হেল্থ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী প্রমুখ।

এএসএস/ওএফ