একজন খুনি কখনও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারে না
২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার এস.টি.আই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য আমিরুল হুদা ওরফে নুরুল হুদা হত্যার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম অপুকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে শহিদুল ইসলাম অপু মনোনয়ন পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল উল্লেখ করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শহিদুল ইসলাম অপু একজন খুনি এবং একাধিক মামলার আসামি। এই দল কোনো খুনিকে মনোনয়ন দিতে পারে না। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দলের হাইকমান্ডকে না জানিয়ে বিচারাধীন হত্যা মামলার আসামিকে মনোনয়ন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের বলতে চাই- খুনি শহিদুল ইসলাম অপুর মনোনয়ন যেন দ্রুত বাতিল করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই মো. নাজমুল হুদা বলেন, ২০১৬ সালে আমার ভাই নুরুল হুদাকে শহিদুল ইসলাম অপুসহ আরও ১৮ জন কুপিয়ে হত্যা করেছে। মামলাটি এখন বিচারাধীন রয়েছে। আমার ভাইয়ের হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জন্য সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও প্রভাবশালী মহল ফাইলটি আটকে রেখেছে। দুঃখের বিষয় জেলে থাকাকালীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম অপুকে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করে ওই প্রভাবশালী মহলটি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, অপু শুধু হত্যাই করেনি, একজন মুক্তিযোদ্ধার হাত দিবালোকে কেটে নিয়েছে এবং ইউনিয়ন শাখা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ককে মেরে পঙ্গু করে দিয়েছে, যার মামলাও বিচারাধীন। তাই আমরা বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের তৃণমূলে যোগ্য প্রার্থীর এতটাই কি সংকট পড়েছে যে হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে প্রার্থী করতে হচ্ছে। আমরা এটা বিশ্বাস করতে চাই এবং আমরা বিশ্বাস করি- আওয়ামী লীগ কোনো অপরাধীকে প্রার্থী না করে স্বচ্ছ-সৎ যেকোনো প্রার্থীকে নাগরপুর-সলিমাবাদ ইউনিয়নে মনোনয়ন দিয়ে দলের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখবে।
নিহতের মা নূরর নাহার (৭৫) সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাই আমার ছেলে হত্যাকারীর যেন দ্রুত বিচার করা হয়। আমি আর কিছু চাই না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে সলিমাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট দাওদুল ইসলাম বলেন, একজন খুনিকে কেন মনোনয়ন দেওয়া হবে। হত্যা মামলার বিচার কাজ চলছে। তিনি একাধিক মামলার আসামি। তার মনোনয়ন বাতিল করে আমরা একজন যোগ্য প্রার্থী চাই। একজন খুনের আসামি কখনও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারে না।
এমএসি/এসএসএইচ