বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। সংগৃহীত ছবি

সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন বাতিল করা হয়নি তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, কার্বন নিঃসরণের হার অনেক কম এবং এটি অত্যন্ত আধুনিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর স্কটল্যান্ড, লন্ডন ও ফ্রান্স সফর নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ কমানোর অংশ হিসেবে সরকার ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেরে, পৃথিবী শিখুক আমাদের কাছে। এছাড়াও আরো কয়লাভিত্তিক ৬টি প্রকল্প বাদ দিয়ে দিয়েছি। আমরা পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য এ রকম বড় উদ্যোগ নিয়েছি। যেগুলো ইতোমধ্যে হয়ে আছে সেগুলো থাকবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র অত্যন্ত আধুনিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে। এতে কার্বন নিঃসরণের হার অত্যন্ত কম।’

সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করে আসছেন পরিবেশবাদী ও অধিকারকর্মীরা, বিশেষ করে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাদের কথা হচ্ছে, এটা হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে, প্রকৃতি ধ্বংস হবে। অন্যদিকে সরকার বলছে, এই প্রকল্পে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১২ সালে। ২০১৪ সালে শুরু হয় এর নির্মাণ কাজ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো চালু হয়নি। 

গ্লাসগোতে বাংলাদেশের ৩ এজেন্ডা

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা থেকে বাঁচাতে তিন এজেন্ডা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের এবং জলবায়ু ঝুঁকি ফোরামের (সিভিএফ) প্রধান হিসেবে সম্মেলনে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্মেলন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আমরা গ্লাসগোতে তিনটি দাবি তুলে ধরব। আমাদের চাওয়া বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখা। প্রত্যেক দূষণকারী দেশকে অবশ্যই কার্যকর এনডিসি দিতে হবে। প্যারিস চুক্তিতে জলবায়ু তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে। সেই অর্থ সমানভাবে অভিযোজন ও প্রশমন কাজে লাগানো হবে। জলবায়ুর প্রভাবে যারা উদ্বাস্তু হচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা অধিক পরিমাণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই, সবুজ প্রযুক্তি চাই; উন্নত দেশগুলোকে এজন্য সহযোগিতা করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘কপ-২৬ সম্মেলন নিয়ে আমরা আশাবাদী। আমরা এ সম্মেলন থেকে ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারব। আমরা আশাবাদী যে, উন্নত দেশগুলো ১০০ বিলিয়ন ডলারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা আমরা নিয়ে আসতে পারব। আমরা সিভিএফের সমস্যাও তুলে ধরব।’

এনআই/এইচকে