গ্রাহকের জমা রাখা পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ছলিম উল্লাহকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার (৩১ অক্টোবর) চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমির আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী শেখ আল জাবেদ।
 
তিনি বলেন, এহসান সোসাইটি নামে সমিতি খুলে গ্রাহকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ছলিম উল্লাহ আজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের আরও সাতটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। 

তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাৎ মামলায় মোট ১১ জন আসামি। এর মধ্যে প্রধান আসামি ছলিম উল্লাহ। বাকি আসামিদের মধ্যে চারজন জামিনে আছেন। অন্যরা পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে আরও সাতটি মামলা আছে। সামনে আরও মামলা করবেন প্রতারিত গ্রাহকরা।
 
আইনজীবী শেখ জাবেদ বলেন, ছলিম উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিল করতেন। তাকে মানুষ বিশ্বাস করত। তিনি তার গ্রাহকদের বলেছেন, এহসান সোসাইটিতে টাকা রাখলে মুনাফা পাবে, ঋণ নিতে পারবে। আট বছর পর জমা করা টাকার দ্বিগুণ দেওয়া হবে। এসব কথা বলে টাকা নিয়ে গ্রাহকদের আর ফেরত দেননি। উল্টো গ্রাহকদের টাকা নিয়ে নিজে পাঁচতলা বাড়ি করেছেন, নিজের নামে সম্পত্তি করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভা সদরে এহসান সোসাইটি নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার ৬০০ জন গ্রাহকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাওলানা ছলিম উল্লাহসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন গ্রাহক আসাদুজ্জামান। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও সাতটি মামলা করা হয়েছে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে। আদালত সে সময় আসাদুজ্জামানের মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইকে) তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত শেষে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

জানা গেছে, মাওলানা ছলিম উল্লাহ ২০০৭ সালে সমন্বয়কারী হিসেবে চট্টগ্রামের নাজির হাটে এহসান সোসাইটি চালু করেন। তিনি ফটিকছড়ি নাজিরহাট বড় মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস ও আলেম ছিলেন। তার কথায় বিশ্বাস করে স্থানীয়রা হিসাব খুলতে শুরু করেন। প্রায় ১৬০০ গ্রাহক ৫ কোটি টাকা জমা রাখেন। কিন্তু পরে গ্রাহককে আর টাকা ফেরত দেননি তিনি।

উল্লেখ্য, হেফাজতের সাবেক আমির আহমদ শফীর কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন ছলিম উল্লাহ। 

কেএ/জেডএস/জেএস