জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না বলেই ভোটারবিহীন সরকার জনমত উপেক্ষা করে ডিজেল, কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

বুধবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় মাঠে তেল গ্যাস ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান গণবিরোধী সরকার জনগণকে শক্রপক্ষ বলে মনে করে। এ কারণে জনগণের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিহিংসা হিংস্র রূপ ধারণ করেছে। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল তখন বাংলাদেশে কমানো হয়নি। তখন লাভের ৪৩ হাজার কোটি টাকা জমা ছিল। বিপিসির লাভের বাইরে ভ্যাট ট্যাক্স বাবদ প্রতিবছর সরকার পায় ১০ হাজার কোটি টাকা। বিপিসি যে ৪৩ হাজার কোটি টাকা লাভ করল, সেই টাকাও সরকার নিয়ে নিয়েছে। লাভের টাকা যদি থাকতো তাহলে জনগণকে ভর্তুকি দিয়ে ২০ বছর চালানো যেত। এখন তেলের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে এ টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। সরকার ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে। জনগণের কাছে তেল বিক্রি করে লাভ করছে। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’

তিনি অবিলম্বে কেরোসিন, ডিজেল ও এলপি গ্যাসের অস্বাভাবিক হারে মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক রাতে হঠাৎ করে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হলো। এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর বিদ্যুতের দাম তিনবার চারবার করে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। এ দাম বাড়ানোর পেছনে সরকার যে যুক্তি দেয় তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে বাজারে কোনো কিছু কেনার জো নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন বলেই এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে। এ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করছে। বাংলাদেশের রাজনীতি ধ্বংস করেছে। এখন তারা মানুষের ভবিষ্যতকে ধ্বংস করছে।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এমন বাস্তবতায় তেলের দাম বাড়ানো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও এ মুহূর্তে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমিয়ে দিয়েছে। তাই জীবনযাত্রার ব্যয় স্বাভাবিক করতে জ্বালানি তেল ও গণপরিবহনের ভাড়া কমানো অত্যন্ত জরুরি। বাজারে মুনাফা শিকারিদের অপতৎপরতা অব্যাহত থাকলে সামনের পরিস্থিতি আরো দুর্বিষহ হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন প্রমুখ।

কেএম/এসএম