খাজা উদ্দিন

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এল এ শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের একটি চেক উত্তোলনের অপচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার সার্ভেয়ার খাজা উদ্দিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দীনের আদালত এ আদেশ দেন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে খাজা উদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

তিনি জানান মঙ্গলবার রাতে খাজা উদ্দিনকে চট্টগ্রামের হকার মার্কেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার নারী জোহুরা বেগম বুধবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। 

চেক উত্তোলনের অপচেষ্টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় খাজা উদ্দিন ও জোহুরা ছাড়াও আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার জোহুরা একটি রেজিস্টার্ড পাওয়ার অব এটর্নি মূলে এল এ  শাখা থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চেক অবৈধভাবে উত্তোলনের আবেদন করেন। ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা পাওয়ারদাতাদের পরিচয় এবং ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে জোহুরা অসংলগ্ন উত্তর দেন। পাওয়াদাতাদের জোহুরা চেনেন না বলে জানান। 

একপর্যায়ে জোহুরা বলেন, তার স্বামী তার পক্ষে পাওয়ার অব এটর্নি দলিল সম্পাদন করেছেন। এ সময় জোহুরা বেগমের স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চান এল এ শাখার কর্মকর্তারা। উত্তরে জোহুরা জানান, তার স্বামী প্রবাসী এবং দুই মাস ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই।

এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে পাওয়ারদাতাদের ঠিকানায় অনুসন্ধান করা হয়। পাওয়ার অব এটর্নি দলিলে বর্ণিত ঠিকানায় আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল নামে দুজনের সন্ধান পাওয়া যায়। 

আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল উভয়েই জানান, তারা জোহুরা বা অন্য কাউকেই তাদের জমির ক্ষতিপূরণ উত্তোলনের জন্য ক্ষমতা অর্পণ করেননি।

জানা গেছে ,অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামালকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। তখন পাওয়ার অব এটর্নি দলিলটি দেখে তারা বলেন, দলিলে তাদের নামের বিপরীতে যে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দেওয়া হয়েছে সে নম্বর দুটি তাদের পরিচয়পত্রের নম্বর নয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রতারণার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষতিপূরণের আবেদনকারী জোহুরা একটি প্রতারক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। ভুয়া লোকদের আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল সাজিয়ে এ প্রতারক সিন্ডিকেট পাওয়ার অব এটর্নি দলিলটি চট্টগ্রামের সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রি করে। এরপর ওই দলিলমূলে ক্ষতিপূরণের আবেদন করে প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

কেএম/আরএইচ