চট্টগ্রামে ভোট শুরু
চট্টগ্রামের আসকারদিঘীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ভোটকেন্দ্রের ছবি - ঢাকা পোস্ট
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ও মোবাইল কোর্ট মাঠে থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
• মেয়র পদে ৭ প্রার্থী
• ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী
• ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৫৭
• ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্র, ৪১০টি ঝুঁকিপূর্ণ
• মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬
• নির্বাচনের আগেই তিনজন খুন
চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ প্রার্থী
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মোট ৭ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়রপ্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, বাংলাদেশে ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী। অন্যদিকে, ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫৭ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
চসিক নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কার্যকালের অবশিষ্ট সময়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার
ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা
ইসি জানিয়েছে, এ নির্বাচনে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১০টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের পাহারায় ৬ জন অস্ত্রধারী পুলিশসহ মোট ১৮ জন দায়িত্ব পালন করবেন। আর সাধারণ কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ১৬ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরে ২৫ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৪১টি টিম এবং পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়নের ৪১টি মোবাইল ও ১৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। অন্যদিকে সিটি নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০ জন জুডিশিয়াল ও ৪০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে থাকবেন।
চসিক নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর অনুসারীদের মারামারি, সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার। এর বাইরেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যেও খুনোখুনির ঘটনাও ঘটেছে। সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে তিনজন খুন হয়েছেন।
গত ২৫ জানুয়ারি জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, চসিক নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কার্যকালের অবশিষ্ট সময়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে অবাধ নিরপেক্ষ আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের পূর্বশর্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণাও অবান্তর হয়ে যায়। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন দল ও মত নির্বিশেষে সবার জন্য দেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষা।
ভোটার সংখ্যা
চট্টগ্রাম সিটিতে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। এ নির্বাচনে ৪০টি ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্র এবং ৪ হাজার ৮৮৬টি বুথ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত বছরের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে গত ২১ মার্চ প্রথম দফায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৪ জুলাই পুনরায় চসিক নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এই সময়ে চসিকের প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে। প্রশাসকের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ২৭ জানুয়ারি ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করেছিল ইসি। এ সিটির মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০২০ সালের ৫ আগস্ট।
এসআর/এইচকে