‘তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী’কে আ.লীগের মনোনয়ন না দেওয়ার দাবি
ওয়ান-ইলেভেনের সময় তালিকাভুক্ত ঢাকার ৪২ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন আবুল কাশেম ওরফে আব্দুল হাদী মিয়াকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফ্রিডম পার্টির মধ্য দিয়ে রাজনীতি শুরু করা এ নেতা বর্তমানে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১ নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বর্তমানে ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘হাইব্রিড হটাও, আওয়ামী লীগ বাঁচাও’ শীর্ষক স্লোগানে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগ ও স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় কমিটির সাবেক সভাপতি আখতার হোসেন মুন্সি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বপন আল মাহমুদ চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে রাজারগাঁও ইউনিয়নের ‘অনুপ্রবেশকারী কমিটি’র তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই নির্দেশনা এখনও চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী মানেননি। ইউনিয়নের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে, পুনরায় কাউন্সিলদের মাধ্যমে ১ নং রাজারগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
আক্তার হোসেন মুন্সি বলেন, কারওয়ান বাজারে এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্ছি হান্নানের সহযোগী ছিলেন এই আব্দুল হাদী মিয়া। কারওয়ান বাজারসহ ঢাকার ৪২ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর মধ্যে হাদী ছিল অন্যতম। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ঢাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের যখন গ্রেফতার শুরু হয়,তখন হাদি বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকেন। পরবর্তীতে একসময় ভারতে আত্মগোপনে চলে যান।
আক্তার হোসেন আরও অভিযোগ তুলে বলেন, আব্দুল হাদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুস্তম বেপারী ও তার পরিবারের সম্পদ দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। ২০১৩ সালের ২৯ জুন রাজারগাঁও বাজারের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী দ্বিজেন্দ্রলাল পোদ্দারের দুটি কাপড়ের দোকান ও পাশের একটি মুদি দোকানসহ মোট তিনটি দোকান লুটপাট করে তার অনুসারী সন্ত্রাসী বাহিনী। রাজারগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম কাজীকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা দুটি পা ভেঙে দিয়েছেন তিনি। ২০১১ ও ২০১৬ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কিশোর গ্যাং তৈরি করেন আব্দুল হাদী।
তিনি বলেন, গত ইউনিয়ন কাউন্সিলে ৯টি ওয়ার্ডের ভোটার লিস্টে প্রায় ৪০ জন জামায়াত-বিএনপির চিহ্নিত নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির অন্তর্ভুক্ত করেন হাদী। এসব ভোট কাজে লাগিয়ে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজারগাঁও ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মো. রহিম কাজী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউছার বেপারী, ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি ইসমাইল মোল্লা প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হাদীর মন্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা যায়নি।
এমএইচএন/এসকেডি