দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। এখানে এসে নানাভাবে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হন অনেকে। হাসপাতালের রান্নাঘরের খাদ্যসামগ্রী এবং মেডিসিন স্টোরের ওষুধ বাইরে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ আছে। এছাড়া অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ানোর ঘটনা ঘটে; প্রায়ই চুরি হয় মোবাইল ফোনও।

 

এসব কথা চিন্তা করে ঢামেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নতুন করে আরও ৩০০ সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। গত ১০ নভেম্বর থেকে এ কার্যক্রম শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে থেকে কিছু সিসি ক্যামেরা ছিল, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রায়ই নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এখানে ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন। একটি চক্র সেবা প্রত্যাশীদের টাকা-মোবাইল নিয়ে যায়। একশ্রেণির অসাধু চক্র এখান থেকে রোগী বাইরে নিয়ে যায়।

এসব কথা চিন্তা করে সিসি ক্যামেরার পরিমাণ বাড়াচ্ছি। যাতে এসব অপরাধী চক্রকে সহজে শনাক্ত করতে পারি। সিসি ক্যামেরা থাকায় তারা এসব কাজ করতে সাহস পাবে না। আশা করছি সিসি ক্যামেরা লাগানোর ফলে বেশ সুবিধা পাওয়া যাবে।

ঢামেক পরিচালক বলেন, এখানে একটি এলইডি ডিসপ্লে স্থাপন করা হবে। যেখানে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হবে। যাতে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ার বিষয়টি দেখে সচেতন হতে পারেন।

পরিচালক নাজমুল হক বলেন, রোগীদের সেবাসহ ম্যানেজমেন্টের কিছু বিষয় সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করছি। যেমন- ওষুধের কিছু ব্যাপার আছে, সেগুলো চুরি হয় কি না, বাইরে চলে যায় কি না অথবা সেগুলোর কোনো মিস ইউজ হচ্ছে কিনা। হাসপাতালের রান্নাঘরে হাজার হাজার রোগীর খাবার রান্না করা হয়। এসব আইটেমগুলো নষ্ট হয় কি না বা অন্য কোনো উপায়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় কি না তাও যাচাই করা যাবে। 

তিনি বলেন, সম্প্রতি ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। রোগীর লোকদের কোনো ওষুধ ও নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে তাদের মোবাইল, টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। তাই এসব স্থানে আমরা সিসি ক্যামেরা লাগাচ্ছি। সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অপরিচিত কারো দেওয়া কোনো খাবার খাবেন না। প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হলে অফিসে যোগাযোগ করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানান, হাসপাতালের রান্নাঘর থেকে মাছ, মাংস, দুধ, কলা ও বিস্কুট একটি চক্র বাইরে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। মেডিসিন স্টোর থেকে বিভিন্ন ওষুধ নানা উপায়ে বাইরে চলে যায়। এছাড়া রোগী ভাগিয়ে অন্য হাসপাতালে নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। পরিচালকের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা বাড়ানোর উদ্যোগকে তারা সাধুবাদ জানান। 

এসএএ/ওএফ