স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হলে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকে বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যান্ড পিস ইন দ্যা কনটেক্সট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘ বলেছে করোনাকালেও আমাদের এলডিসি থেকে উত্তরণের আগের অর্জনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। তাই জাতিসংঘ ঘোষণা দিয়েছে যে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হবে। আর এটি হবে ২০২৬ সালে। আমরা খুব আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় গত ১২ বছরে যে সাফল্য বাংলাদেশ অর্জন করেছে, তার ফলে আমরা সবগুলো সূচকেই পাস করেছি। শুধু পাস নয়, পাসের অনেক ওপরে আমরা।’

‘তবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরে আমাদের বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হবে। আমরা এলডিসি হিসেবে অনেক সুবিধা পেতাম। আমরা শুধুমাত্র অস্ত্র ছাড়া অন্য যেকোনো পণ্য সস্তায় বিক্রি করতে পারতাম। আগামীতে এ সুবিধাগুলো থাকবে না।’- বক্তব্যে যোগ করেন মোমেন।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ অনুমোদন পায় বাংলাদেশ। আর এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল। জাতিসংঘের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যাতে এ সুবিধাগুলো ব্যবহার করতে পারি সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আমাদের জিএসপি সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আমরা প্রযুক্তির বিষয়ে যে সুবিধা পেতাম সেটা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৬-এর পর আরও ১২ বছর সুবিধাগুলো বাড়ানোর জন্য বলেছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।’

মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশি পণ্য রফতানিতে শুল্ক সুবিধা জিএসপি প্লাস নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ তাদের জানিয়েছে যে আমরা জিএসপি প্লাস চাই।’

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করছেন জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) অথবা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা করছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আমরা কিছু প্রতিবন্ধকতা সামলাতে পারব।’

এলডিসিতে না থাকার কারণে বিদেশি ঋণের সুদের হার বাড়বে। বাংলাদেশ এ বিষয়েও সতর্ক বলে জানান মোমেন।

এনআই/এইচআর/এমএইচএস