জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) ঢাকার মিরপুরে ৯টি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মিরপুর ডিভিশনের আওতায় বাণিজ্যিক ৪২ প্লটের মধ্যে ৯টি প্লটের ২৫ দশমিক ৭৬ কাঠা আবাসিক মূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেখানে প্লট বরাদ্দে সরকারের ৭০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। 

এমন অভিযোগে রোববার (২৮ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সংস্থাটির উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মিরপুর-১ নম্বর সেকশনে চিড়িয়াখানা রোডের শুরুতে ৯টি বাণিজ্যিক প্লটের অবস্থান। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি কাঠা কমপক্ষে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। কিন্তু জাগৃকের বরাদ্দ নির্দেশিকা উপেক্ষা করে এসব প্লট আবাসিক হিসেবে প্রতি কাঠা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫০ লাখ টাকায়। ফলে এই ২৫ দশমিক ৭৬ কাঠা জমির বাজারমূল্যের চেয়ে কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকা সরকারের ক্ষতিসাধন হয়েছে ।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ডিভিশন-১ এর তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিলা খানম প্রধান কার্যালয়ে বাণিজ্যিক প্লটের একটি প্রতিবেদন পাঠান। সেখানে মোট ৪২টি বাণিজ্যিক প্লটের তালিকায় রয়েছে ৯টি প্লট। তৎকালীন চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ওই বছরের ২০ মার্চ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ সংস্থার আরও কিছু প্লটসহ সব জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দের সিদ্ধান্তের জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে ৪২টি বাণিজ্যিক প্লটসহ মোট ৬৩টি বিধিমালা অনুযায়ী নিলামে তুলে বিক্রি করার জন্য চিঠি দেন। 

এরইমধ্যে মাঝখান থেকে ৯টি প্লটের মোট ২৫ দশমিক ৭৬ কাঠা আবাসিক মূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গৃহায়নের ১৯৭তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিরপুর সেকশনের ৮০ ফুটের ঊর্ধ্বে সড়কের পাশের আবাসিক জমির মূল্য কাঠাপ্রতি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সে হিসাবে এ জমির দাম ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো হয়। কিন্তু বাস্তবে এখানে কাঠাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য কমবেশি ৩ কোটি টাকার মতো। সেই হিসাবে জমির মোট মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখা ও আইন শাখাকে সংশ্লিষ্টরা কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক প্লটকে আবাসিক করে তা বরাদ্দ দিয়ে সরকারের কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছে। 

আরএম/জেডএস