স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ৬ ডিসেম্বর স্বীকৃতি দেয় ভারত। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার ৫০ বছর তথা কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে মৈত্রী দিবস পালন করতে যাচ্ছে ঢাকা ও নয়া দিল্লি। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ১৮ দেশে পালন করা হবে এ মৈত্রী দিবস।
 
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮টি মিশনে যৌথভাবে মৈত্রী দিবস পালন করা হবে। বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখা হবে। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তুলে আনা হবে দুদেশের সম্পর্কের শুরু থেকে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরে একসঙ্গে পথচলার দিনগুলোকে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা ১৮টি মিশনে মৈত্রী দিবস পালন করছি। মার্চে ভারতের নরেন্দ্র মোদি যখন ঢাকায় আসেন তখনই আমরা ঠিক করেছিলাম ১৮টা মিশনে যৌথভাবে দিবসটি উদযাপন করব। আমরা পুরো বিশ্বব্যাপী জানাতে চাচ্ছি, ভারত আমাদের বন্ধু। দুদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ভালো প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন, বিশেষ করে সব সমস্যা যে আমরা আলাপ করে মিটমাট করছি এটা বিশ্বকে দেখাতে চাই। এটা আমরা উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের কমন কালচার ও হেরিটেজ সেগুলো তুলে ধরতে চাই।’

মৈত্রী দিবসের আয়োজন প্রসঙ্গে সচিব মাশফি জানান, ছয়টি মিশনে দুই দেশের রাষ্ট্রদূত যৌথভাবে একটা রিসিপশান করছেন, সেখানে একটা কালচারাল প্রোগ্রাম থাকবে। একটা অডিও ভিজুয়াল দেখানো হবে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ওপরে। তারপরে দুই দেশের কালচালারাল কিছু প্রোগ্রাম থাকবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে করে। দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা স্টেটমেন্ট দেবেন। এসব অনুষ্ঠানে দুদেশের সরকারের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। মিশনগুলোতে কিছু পোস্টার, ছবি, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের ছবি তথা আলোকচিত্র প্রদর্শনী হবে।’

চলতি বছরের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে ৬ ডিসেম্বরকে মৈত্রী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা ও দিল্লি ছাড়াও বিশ্বের যে ১৮টি দেশে মৈত্রী দিবস পালন করা হচ্ছে, সে দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। তার ১০ দিন পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ করে। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি।

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মৈত্রী দিবসের আয়োজন ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে গভীর ও চিরস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতিফলন, একই সঙ্গে রক্ত ও ত্যাগ স্বীকারের ইতিহাস।

দুই দেশের অংশগ্রহণে দিল্লিতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান অরিন্দম বাগচি।

এনআই/ওএফ