বেতন বৈষম্য : দাবি না মানলে আন্দোলনে নামবে সরকারি কর্মচারীরা
দ্রুত নবম পে-কমিশন গঠন করে সমান বেতন বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি নবম পে-স্কেল ঘােষণা, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল এবং অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়নসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন। এ দাবি না মানলে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপাের্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক আলােচনা সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
সভায় জানানো হয়, দ্রুত নবম পে-কমিশন গঠন করে সমান বেতন বৈষম্য দূর করার মাধ্যমে নবম পে-স্কেল ঘােষণা করা। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন এবং সব ভাতা বর্তমান বাজার চাহিদা অনুযায়ী পুনর্নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সভায় ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি মাে. মিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মনের পুঞ্জিভূত অসন্তোষ ও বিরাজিত ক্ষোভ নিরসনের জন্য দ্রুত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
দাবিগুলো হলো
১. দ্রুত নবম পে-কমিশন গঠন করে চলমান বেতন বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে নবম পে-স্কেল ঘােষণা ও বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী পে-স্কেল দেওয়ার আগ পর্যন্ত সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন কমিটিতে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২. টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল সহ বিভিন্ন দফতরে বর্তমানে প্রচলিত অসঙ্গতিপূর্ণ নিয়ােগবিধি পরিবর্তন করে শিক্ষাগত যােগ্যতা উন্নীতকরণসহ এক ও অভিন্ন নিয়ােগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।
৩. ব্লকপােস্ট প্রথা বিলুপ্ত করে সব পদে সমহারে পদোন্নতি প্রদান, আউটসাের্সিং প্রথা বাতিলসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে ৫ বছর এর বেশি সময় ধরে পরিচালিত/চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীদের স্থায়ী ও রাজস্ব খাতে অর্ন্তভুক্ত করতে হবে।
৪, সব দফতর, অধিদফতর, পরিদফতর, স্বায়ত্বসাশিত প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেশনে কর্মরত কর্মচারীদের সচিবালয়ের ন্যায় পদ পদবী ও গ্রেড দিতে হবে।
৫. সব ভাতা বর্তমান বাজার চাহিদা অনুযায়ী পুনর্নির্ধারণ সহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়ােজিত সবকে ঝুঁকি ভাতা প্রদান, টেকনিক্যাল কাজে নিয়ােজিত সবাইকে টেকনিক্যাল গ্রেড প্রদান, অতিরিক্ত কাজের জন্য অভারটাইম ভাতা প্রদানসহ ১০০ শতাংশ পেনশন সমর্পণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে তে প্রচলিত প্রহসনের ৫০ টাকা রেশনভাতা বাতিল করে ১১-২০ গ্রেডের সব কর্মচারীদের বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা ১১ থেকে ২০ গ্রেডের এ বঞ্চিত লাখ লাখ কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়নে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে আমরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসুচি পালন করে আসছি। গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের জন্য আবেদন করেছি। অতঃপর ১০ অক্টোবর দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে সংবাদ সম্মেলন ও ২৪ অক্টোবর ৬৪ জেলায় একযােগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু অজকে পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবি বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
তাই আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। যদি ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আগামী ২৪ ডিসেম্বর কঠোর কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবো।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হােসেন, সহ-সভাপতি মাে. মনির হোসেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক ইসমাইল হােসেন প্রমুখ।
এসআই/এসএম