ঢাকায় আবাসিক ভবন সর্বোচ্চ হবে আটতলা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ-২০১৬-২০৩৫) এ প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানীতে ভবন নির্মাণে ৫০ শতাংশ খরচ বেড়ে যাবে। যার মূল্য দিতে হবে সাধারণ ভোক্তাকে। তাই নতুন ড্যাপে আবাসিক ভবনের উচ্চতাসংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন না করা দাবি জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল অ্যাস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।  

রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

পাঁচ দিনব্যাপী আবাসন মেলার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে রিহ্যাব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মোহাম্মদ সোহেল রানা, ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

নতুন শিল্পে বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার, ফ্ল্যাট ও প্লটসহ কয়েকটি খাতে বিনাপ্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। ফলে এ অর্থ বিদেশ পাচার না হয়ে দেশের আবাসন খাতে বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। তাই অর্থ পাচার কমাতে অপ্রদর্শিত আয় সহজে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, কালো টাকা বলতে অপ্রদর্শিত আয়। অর্থাৎ এ টাকার এখনও আয়কর দেওয়া হয়নি। এ অর্থ আমরা নষ্ট করতে পারি না বা এমন কোনো পথ খোলা রাখা উচিত হবে না যেখান দিয়ে কানাডা মালয়েশিয়া চলে যাবে। এটা আমাদের দেশের টাকা, আমরা সব সময় চাইব এ অর্থ আমাদের দেশেই বিনিয়োগ হোক। যদি সুযোগ দিয়ে এ টাকা রাখা যায় তাহলে এটা দেশেরই উন্নয়ন। তাই আমরা সব সময় সরকারকে বলি অপ্রদর্শিত আয় দেশ থেকে পাচারের সুযোগ করে না দিয়ে বিনিয়োগের সুবিধা করে দেন।

সম্প্রতি সময়ে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার কারণে ভবন নির্মাণে ১৫ শতাংশ খরচ বেড়েছে এমন দাবি করে রিহ্যাবের ব্যবসায়ীরা বলেন, ভবন নির্মাণের ব্যয় বাড়লে ক্রেতাদের বেশি মূল্য দিতে হয়। তাই নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ানোর আগে যেন অবশ্যই আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সমন্বয় করেন এ প্রস্তাব দেন রিহ্যাব নেতারা।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ মেলা শুরু হবে। মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলায় প্রায় ১৫০টি আবাসন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে যেখানে থাকবে ২২০টি স্টল। এবারের রিহ্যাব ফেয়ারে দুটি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ৬টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৫ টি নির্মাণসামগ্রী ও ১৩ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থাকবে।  

রিহ্যাব ফেয়ার ২০২১ এ ডায়মন্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ইউ-এস বাংলা আ্যাসেট লিমিটেড এবং রূপায়ন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড। গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে শেলটেক প্রাইভেট লিমিটেড, আকাশ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, ক্রিডেন্স হাউজিং লিমিটেড, নাভানা রিয়েল অ্যাস্টেট লিমিটেড, রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড এবং আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন। এছাড়া কো-স্পন্সর হিসেবে অংশগ্রহণ করছে সর্বমোট ২২ টি প্রতিষ্ঠান ।

মেলা উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, রাজউক চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লা নূরী উপস্থিত থাকবেন।

বিগত বছরের মত এবারও মেলার সিঙ্গেল অ্যান্টির ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মাল্টিপল অ্যান্টির ফি ১০০ টাকা। সিঙ্গেল এন্ট্রি টিকিটে একবার ও মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিটে পাঁচবার মেলায় প্রবেশ করা যাবে। অ্যান্টি টিকিটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যে ব্যয় করবে রিহ্যাব। অ্যান্টি টিকিটের র‍্যাফেল ড্র তে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার। মেলার শেষে প্রতিদিন রাত ৯টায় চলবে র‍্যাফেল ড্র, থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

এসআই/আইএসএইচ