মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, আমি জ্বীন ও মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার এবাদত করার জন্য। এ মহান উপদেশ থেকে মানুষ যখনই দূরে সরে তখনই জীবনে নেমে আসে ব্যর্থতার কালো ছায়া। মানুষের মধ্যে দুই ধরনের সত্তা বিদ্যমান, ইনসানিয়ত ও নফসানিয়ত। ইনসানিয়ত যখন প্রবল হয়, নফসানিয়ত তখন দুর্বল হয়। আল্লাহকে পাওয়ার জন্য নবী (দ.) এর পথ ধরে জীবন সাজানোর মধ্যেই রয়েছে ইনসানিয়ত অর্জনের রূপরেখা। আর এ পথের যারা মহান দায়িত্ব পালন করেন, তারা নবীর উত্তরাধিকারী।

বেলায়তের জগতে তারা অলি গাউস কুতুবসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। মহান আল্লাহর অনুগ্রহে সিরাতুল মোস্তাকিমের অনন্য রাহবার খলিফায়ে রাসূল হজরত গাউছুল আজম (রা.) কে পেয়েছি। যিনি তাওয়াজ্জুহর মাধ্যমে প্রিয় নবীর নূরে বাতেন মানব শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ লতিফায় দান করে নফসানিয়ত সৃষ্টিকারী সবকিছুকে দূরীভূত করে ইনসানিয়তের হাকীক্বত প্রতিষ্ঠা করেন মানুষের অন্তঃকরণে।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বাদ জুমা চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জামে মসজিদের সামনের ময়দানে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এশায়াত মাহফিলে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদ্দেশে প্রধান মেহমান তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (দ.) হজরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।

তিনি আরও বলেন, নবীর নূরের অমৃত সুধা আহরণ করে লাখ লাখ পথহারা মানুষকে আল্লাহ ও রাসূল (দ.) এর পথে এনে কালের শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তীর ভূমিকা পালন করেছে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত। যেখানে এসে অহংকার, রিয়া, লোভ, হিংসা, কৃপণতাসহ মানুষ সব ধরনের মানবীয় দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হয়ে নিজেকে খোদার দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য মনে প্রাণে চেষ্টা করে। আল্লাহকে পাওয়ার এমন যুগান্তকারী দর্শনকে মানুষের অন্তরে অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করে এশায়াতের কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— এলবিয়ন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ নুর খাঁন, চসিক ৪নং চাঁদগাও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ এসরারুল হক, চসিক ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লায়ন মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, ব্যারিস্টার কফিল উদ্দিন, ৫১নং মক্কা শরীফ শাখার সভাপতি মাওলানা ইসহাক মুনিরী প্রমুখ।

এতে আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কলোনী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো. ইয়াহিয়া পারভেজ, ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আকবর আলী আকাশ, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাবুল, চট্টগ্রাম দৃষ্টি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মঈনউদ্দিন ফরহাদ, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন লিটন, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম দিনু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছরওয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন, আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল আমীন চৌধুরী।

বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন নূরী প্রমুখ।

মাহফিলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ, ওলামায়ে কেরামসহ হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান উপস্থিত ছিলেন।

মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

এসএসএইচ