যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মহিলা আইনজীবী সমিতির ১৪ দফা সুপারিশ
হাইকোর্টের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন ও কার্যকারিতা নিশ্চিতসহ ১৪ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকালে জাতীয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সমিতিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী।
বিজ্ঞাপন
নারী, শিশু ও অন্যান্য নির্যাতন বন্ধে সমিতির অন্যান্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- স্থানীয় গণমাধ্যকর্মীদেরকে যেকোনও ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত তথ্য প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে ও নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে; স্থানীয় জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণে শিশু বিবাহ, পারিবারিক নির্যাতনসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে; দ্রুত ট্রায়ালের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনতে হবে; চার্জ গঠনের পর দ্রুত সাক্ষীর ব্যবস্থা করা; স্থানীয় প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মী সবাই মিলে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করা; শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে পরিবার ও সমাজের দায়বদ্ধতার জায়গাটি সুনিশ্চিত করা।
এছাড়া, যথপোযুক্ত বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীর সহজগম্যতা নিশ্চিত করা; দ্রুত বিচার ও সাক্ষী সুরক্ষার পাশাপাশি আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেস সমূহের যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করা; তদন্তকার্যে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে; মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুত বিচার সম্পন্নের জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো; প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুদের সামগ্রিক তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণের জন্য যথাযথ মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; প্রান্তিক গোষ্ঠীর (প্রতিবন্ধী, হিজড়া) জন্য বৈষম্যহীন আইনি পরিষেবা নিশ্চিত করা; নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০২০ এ সকল ধরনের ধর্ষণকে আইনের আওতাভুক্ত করার জন্য ‘পেনিট্রেশন’ এর সংজ্ঞা যুক্ত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
কর্মস্থল ও শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিকনির্দেশনা চেয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ে হাইকোর্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমসহ সব প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের আদেশ দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোবায়দা পারভিন, সহ-সভাপতি এডভোকেট সীমা জহুর।
এমএইচএন/আইএসএইচ