পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মো. মাহবুবুর রহমান (৫০) এক ব্যক্তি তদবির বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা রকম প্রতারণা করছিল। প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া লাখ লাখ টাকায় বিলাসী জীবন যাপন করেছিলেন তিনি।

কিন্তু পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করতে গিয়ে ধরা পরেন মো. মাহবুবর রহমান। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ও অর্গানাইজড ক্রাইমের নামে একটি ভুয়া অফিসের আদেশ দিয়ে প্রতারণা করতে গিয়ে সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আটক হন মাহবুবুর রহমান।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, আটক মো. মাহবুবুর রহমান নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন থানা-ফাঁড়িসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত অফিসারদের কাছে তদবির বাণিজ্য করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায়, মতিঝিল থানার একটি মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং অবৈধ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অনেক টাকা সে নেয়। ওই ভুক্তভোগীকে তার প্রভাব ও ক্ষমতা বুঝানোর জন্য মামলার আইও পরিবর্তন সংক্রান্তে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ও অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি ভুয়া অফিস আদেশ তৈরি করে তাদের দেয়।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, ওই ভুক্তভোগী অফিস আদেশের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন মারফত জানার চেষ্টা করলে বিষয়টি সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে সিআইডি। পরে প্রতারণার সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়ে সিআইডির এলআইসি ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের সমন্বিত একটি চৌকস টিম গতকাল দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরে অনেক লোকজনকে চাকরিতে নিয়োগ-পদোন্নতি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা সে হাতিয়েছে। এ ছাড়া জমির দালালীসহ অন্যান্য প্রতারণার কাজ সে অত্যন্ত সুনিপুনভাবে করে আসছে। সে পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হয়ে ঢাকাতে বিলাস বহুল জীবন যাপন করে আসছে বলেও জানা যায়।

আটকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।

এমএসি/আইএসএইচ