আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এমপি হিসেবে একজন সচিবের কাছে গেলে কোনো মূল্যায়ন নেই। আমাদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নেই। পিয়ন পর্যন্ত আজকে আমাদের দাম দেয় না। আমরা আমলাদের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। 

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ময়মনসিংহ-৩ আসনের এ সংসদ সদস্য বলেন, এলাকার স্কুল-কলেজ ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদ নির্মাণ কাজের ডিজাইন দেওয়া হলেও সেই কাজ হয়নি। সমস্ত কাজগুলো একের পর এক বন্ধের পথে রয়েছে। ঠিকাদাররা বলেন টাকা পাইনি কাজ কীভাবে করব। এমপির কোটার ২০ কোটি টাকার কাজও করা হয় না। এ রকম হলে নির্বাচনের সময় মানুষের কাছে জবাব দিতে পারব না। নির্বাচনের আগে আর দুই বছর সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে কাজগুলো শেষ করাতে না পারলে নির্বাচনের সময় জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারব না।

ময়মনসিংহে তার নির্বাচনী এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তাতে গতি নেই এমন অভিযোগ করেন এই সংসদ সদস্য। 

তিনি বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট করার পরও এর নির্মাণ কাজ হচ্ছে না আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। এখানে পিডি এক কথা বলেন, ডিসি আরেক কথা বলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে আরেক কথা বলেন। জমিসহ সমস্ত ব্যবস্থা থকলেও কেন যে কাজ শুরু হচ্ছে না তা আমরা জানি না। এই প্রকল্পের পিডি সাহেবের মনে হয় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তার ভেতরে একটা দুর্বলতা রয়েছে।

নাজিম উদ্দিন বলেন, সত্য কথা বলতে আমরা যদি সংসদে কথা বলি তাহলে বিষয়টি বিরোধী দলের ফ্লোরের মত হয়ে যায়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কিন্তু আমরা ভুগছি। আমলারা যেভাবে কথা বলেন, একজন সংসদ সদস্যের মূল্য নেই তাদের কাছে। 

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা সংসদ সদস্য হয়েছেন বলেই তাদের কাছে শুধু স্যার ডাকটা শুনতে পান। আমরা আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সংসদ সদস্যদের বলব দয়া করে আমলাতন্ত্র থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আপনারা শক্ত হন। শক্ত না হলে তারা আমাদের গুরুত্ব দেবে না। 

ইউটিউবে অপপ্রচার ও মিথ্যা গুজব ছড়ান হচ্ছে অভিযোগ তুলে সরকার দলীয় এ সংসদ সদস্য ইউটিউব বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন।

তিনি বলেন, ইউটিউবে দেখি- খালেদা জিয়া মরে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা কালকেই ক্ষমতা চ্যুত হয়ে যাচ্ছেন। আবার দেখি সেনা প্রধানদের টেনে নামান হচ্ছে। এই যে প্রচার প্রোপাগান্ডা ইউটিউবে আমরা দেখি এগুলো কীভাবে আসছে? এভাবে বিভ্রান্ত ছড়ান হচ্ছে-তথ্য মন্ত্রণালয় কী করেন আমরা বুঝি না। তথ্য মন্ত্রণালয়কে বলব দরকার হলে ইউটিউব বন্ধ করে দেন।

এইউএ/আইএসএইচ