সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি র‌্যাব। আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে এরই মধ্যে ৮৫ বার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। তারপরও র‌্যাব বলছে, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।  

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, যে কোনো মামলার তদন্ত সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে করে র‌্যাব। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৬০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যেসব তথ্য উপাত্ত ও আলামত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার র‌্যাব তা করছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করা যাবে। র‌্যাব সবসময় চেষ্টা করে তদন্তে যেন নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত না হয়।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ভার গ্রহণ করেছি দুই মাস পর। আমরা রিমান্ডে এনে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সরকার এতটাই গুরুত্ব দিয়েছে এ মামলার ক্ষেত্রে যে তথ্য উপাত্ত প্রমাণের জন্য আলামত পরীক্ষা করতে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে সময় লেগেছে। আমরা মাত্র কিছুদিন আগে পেয়েছি, তদন্ত চলমান।

সাগর-রুনি হত্যার ১০ বছর হচ্ছে, আর কতো দেরি হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বলেন, র‌্যাব এ মামলা তদন্ত করছে আদালতের নির্দেশে। আমরা সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। 

এমন চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করার মতো সক্ষমতা কি র‌্যাবের নেই? এমন প্রশ্নের উত্তরে কমান্ডার মঈন বলেন, র‌্যাব অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করেছে। র‌্যাব কখনো নিজে থেকে মামলার তদন্ত করে না। আদালত দিলেই কেবল তদন্ত করে। আমরা যে আজ একটি অভিযান পরিচালনা করেছি এটারও আলামত ও আসামি থানায় সোপর্দ করা হবে। সুতরাং নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই র‌্যাব সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করছে।

বাদীপক্ষ মামলার তদন্তে র‌্যাবের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে এমন বক্তব্যও আসছে, এ প্রসঙ্গে র‌্যাব গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, আমরা এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিটি ডেটে আদালতকে অবহিত করছি। আমরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ বা বক্তব্য পাইনি। আদালতও আমাদের বলেনি। এখানে তদন্ত নিয়ে খারাপ লাগার কিছু নেই। বাংলাদেশের কয়টি মামলায় আলামত পরীক্ষা করে আসামিকে শনাক্তের চেষ্টা করা হয়? আমরা কিন্তু সেটিই করছি। আমরা চাই এটি দ্রুত শেষ হোক। নিরপরাধ কেউ সাজা না পাক।

জেইউ/এসকেডি