‘গণতন্ত্র উদ্ধারে’ এক হতে চান স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র নেতারা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু চান স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা বলছেন, এরশাদের পতনের পর ৯০ এবং ৯৬ এর নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। বিশেষ করে গত দুটি নির্বাচন ক্রুটিপূর্ণ হয়েছে।
সোমবার স্বৈরাচারবিরোধী দিবস স্মরণে শিক্ষা ভবনের সামনে শিক্ষা ও গণতন্ত্র স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নেতারা।
বিজ্ঞাপন
‘১৯৮২-৯০ স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দিবস’ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক তখনকার জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি মুনির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তখনকার ছাত্রমৈত্রীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিরাজুম মনিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
নেতারা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, পরিকল্পিত অর্থনীতি, বিকশিত জীবনবোধ নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে হলে আবারও একসঙ্গে একই প্লাটফর্মে এসে আন্দোলন করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সভাপতির বক্তব্যে মুনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের মধ্যে একটি স্বপ্ন কাজ করত। ১০ আন্দোলনকারীর মৃত্যুতেও সেসময় আমাদের আন্দোলন থেমে থাকেনি। এক পর্যায়ে আমরা সফলতা পাই।
স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পিত অর্থনীতি, বিকশিত জীবনবোধ নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে হলে আবারও একসঙ্গে একই প্ল্যাটফর্মে আসা উচিত। আসুন আমরা একই প্রত্যয়ে বলীয়ান হই। ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’— এ কথার মতো আমি বলতে চাই, আমরা সামনে না এলে তো শহীদের রক্ত বৃথা যাবেই।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা শফী আহমেদ আলোচনা সভায় বলেন, এরশাদের পতন ঘটাতে পারলেও আদর্শিক রাজনীতির দেওলিয়াত্ব প্রমাণিত হয়েছে। আমরা চাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আমরা এমন সমাজ চাইনি যেখানে গণতন্ত্র নেই, মানুষের বাক-স্বাধীনতা নেই। ছাত্র আন্দোলনের সর্বঐক্যের দশ দফা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এ মুহূর্তে দেশে যে সংকট চলছে, তা হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি না ।
আলোচনায় জানানো হয়, এইচ এম এরশাদের সময়ে প্রণীত মজিদ খান কমিশনের শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলা ভবনের সামনে বটতলায় মিলিত হন। দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনের দিকে গেলে তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। তখন প্রায় ১০ আন্দোলনকারী নিহত হন, ১৮ ফেব্রুয়ারি সরকার শিক্ষানীতি বাতিল করতে বাধ্য হয়। এর মধ্য দিয়েই এরশাদ সরকারের পতন ঘটেছিল।
আলোচনা সভায় গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনের নেতা নূর আহমেদ, কবি মোহন রায়হান, নূর আহমেদ বকুল, তারেক আলী, লুৎফা হাসান রোজি, ফারুক আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
এমআই/আরএইচ