এবারের বইমেলাতেও তৃতীয় লিঙ্গের সিমরান, দিচ্ছেন হুইল চেয়ার সেবা
হুইল চেয়ার হাতে সিমরান
অমর একুশে বইমেলা ২০২২-এ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন তৃতীয় লিঙ্গের সিমরান। সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ‘হুইল চেয়ার সেবা’ দিচ্ছেন তিনি।
শুক্রবার বইমেলার চতুর্থ দিনে তাকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে দেখা যায়। ২০২১ সালের বইমেলাতেও তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, গত বছর যখন আমি জানতে পারি সুইচ বাংলাদেশ মানুষের সেবায় এ উদ্যোগ নিয়েছে, তখন আমি স্বেচ্ছায় কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করি। তারা আমাকে সুযোগ দেয়। গতবার মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছিলাম, কাজ করতেও অনেক ভালো লেগেছিল। তাই এবারও প্রতিবন্ধীদের সেবায় কাজ করতে চলে এসেছি।
তিনি বলেন, এ বছরের মেলায় আজই আমার প্রথম দিন। মেলা যতদিন আছে, ততদিন কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করব। মানুষের পাশে থাকা আমাদের সবার কর্তব্য। আমি চাই মানুষের সেবা করতে। অক্ষম ব্যক্তিদের আমি মেলা পরিদর্শন করাব।
বিজ্ঞাপন
তৃতীয় লিঙ্গের নারীকে কাজে যুক্ত করার বিষয়ে সুইচ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর সিমরান আমাদের সঙ্গে বইমেলায় কাজ করেছিলেন। এরপর থেকে তিনি আমাদের পথশিশুদের শিক্ষা দান, ১০ টাকায় কাপড় প্রজেক্টগুলোতে নিয়মিত কাজ করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের বইমেলাতেও সুইচ বাংলাদেশের হয়ে মানুষের সেবায় কাজ করছেন।
তিনি বলেন, সিমরান মানুষ হিসেবে অনেক ভালো। মানুষের সেবা করতে আগ্রহী। আন্তরিক ব্যবহার দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। তাকে কেউ ভয় পায় না, বরং ভালোবাসে। তাকে নিয়ে আমাদের ভালো পরিকল্পনা আছে।
সুইচ বাংলাদেশের হুইল চেয়ার সেবা
শারীরিক প্রতিবন্ধী ও হেঁটে চলাফেরায় অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) হুইল চেয়ার সেবা উদ্বোধন করে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। বাংলা একাডেমি ও বিকাশের সহযোগিতায় তারা এ সেবাটি দিচ্ছে।
এ সেবার অংশ হিসেবে প্রতিদিন মেলার টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে ১৫টি হুইল চেয়ার থাকবে। পাশাপাশি এ কর্মসূচিতে ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। প্রতিবন্ধী কিংবা চলাফেরা করতে অক্ষম যে কেউ বিনামূল্যে সেবাটি নিতে পারছেন।
এ প্রসঙ্গে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুঈনুল আহসান ফয়সাল বলেন, গত ৬ বছর মেলায় আমরা এ সেবা সেবা দিয়ে আসছি। হাঁটতে পারেন না-এমন ব্যক্তিরা মেলার গেট পর্যন্ত কোনোভাবে পৌঁছাতে পারলেই আর চিন্তা নেই। আমরা কোনো বিনিময় ছাড়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীর যতক্ষণ পর্যন্ত মন চায়, ততক্ষণ মেলা ঘুরিয়ে নিয়ে আসি। মেলার দুই প্রান্ত টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে মোট ১৫টি হুইল চেয়ার থাকবে সেবা দেওয়ার জন্য।
তিনি আরো বলেন, এবারের মেলাতেও হুইল চেয়ারগুলোর ব্যবস্থা করেছে বাংলা একাডেমি। এতে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা। সার্বিক সহযোগিতায় করছে বিকাশ। প্রতিদিন দুপুর দুইটা থেকে রাত নয়টা এবং পর্যন্ত চলছে আমাদের সেবা কার্যক্রম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও ডিএমসিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে পরিচালিত সংগঠন সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ২০১১ সাল থেকে পথশিশুদের শিক্ষা দান, ১০ টাকায় কাপড়সহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে।
এইচআর/আরএইচ