পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৭ মামলা দায়ের করেছে দুদক

এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৮ কোটি টাকা আত্মসাতে পিকে হালদার সিন্ডিকেটের ১৩ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ সংস্থার উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জনসংযোগ দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আসামিরা হলেন- রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, মেসার্স বর্ণ-এর মালিক অনঙ্গ মোহন রায়; এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম; পরিচালক এম এ হাফিজ, অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও সত্য গোপাল পোদ্দার; সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার; সহকারী ব্যবস্থাপক নিয়াজ আহমেদ ফারুকী ও দিপক কুমার চক্রবর্তী।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে কাগুজে প্রতিষ্ঠান বর্ণ-এর প্রোপ্রাইটর অনঙ্গ মোহন রায়কে ভুয়া ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন।বর্ণ নামীয় ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে মোট ৩৮ কোটি টাকা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। 

এজাহারে আরও বলা হয়, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল শাহরিয়ার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত জবানবন্দিতে বলেছেন, তার নিয়োগ মূলত পি কে হালদার দিয়েছেন। পি কে হালদার মাঝে মাঝেই এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতেন এবং ঋণ অনুমোদনে ভূমিকা পালন করতেন। ঋণ অনুমোদনে পর ঋণের বেশির ভাগ অর্থ পি কে হালদারয়ের মৌখিক নির্দেশে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে এবং তারা অর্থ তুলে দেশের বাইরে পাচার করা করেছেন। অর্থাৎ, ঋণের নামে গৃহীত অর্থ পি কে হালদার গংদের হিসাবে সরিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৩ মামলা অনুমোদন দেয় দুদক। ভুয়া ও কাগুজে ১৩ প্রতিষ্ঠানের নামে জাল নথিপত্র প্রস্তুত করে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই মামলা নিয়ে চারটি মামলা হলো। এর আগে ৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদার এবং এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা দায়ের হয়। বাকি ৯টি মামলা শিগগিরই করা হবে।

এর আগে ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগে ওঠার পর এখন পর্যন্ত ২৭ মামলা দায়ের করে দুদক।

আরএম/এইচকে