নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধা বেলা হরতাল চলছে। সোমবার ভোর ছয়টা থেকে হরতালের কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচি পালনের সময় রাজধানীসহ সারাদেশে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা ও ধরপাকড়ের অভিযোগ করেছেন জোটের নেতারা। 

তাদের দাবি, সকালে হরতালের সমর্থনে সারাদেশে বাম জোটের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। ঢাকাসহ বেশ কিছু জেলায় মিছিলে হামলাও করা হয়েছে। মিরপুর এলাকা থেকে ৯ জনসহ সারাদেশে ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। 

পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গতকাল রাত থেকেই বাম নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে। দেশের ১৪-১৫টি জেলা থেকে খবর পেয়েছি, ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক ও তুলে নেওয়া হয়েছে। আজ সকালেও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হরতাল সমর্থনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জনগণের ব্যাপক স্বতস্ফুর্ত সমর্থনের ভিত্তিতে সকাল ছয়টা থেকে আমাদের এ হরতাল পালিত হচ্ছে। এ হরতাল ইতোমধ্যে মানুষের মন জয় করেছে। কারণ এটি জনদাবির হরতাল, মানুষকে বাচাঁনোর হরতাল। 

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবির) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এ হরতাল জনগণের হরতালে পরিণত হয়েছে। তারা স্বতস্ফুর্তভাবে এ হরতাল পালন করছে। মানুষ পেটের তাগিদে পায়ে হেটেঁ গন্তব্যে যাচ্ছে। 

কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করে প্রিন্স বলেন, তাদের আটকসহ হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। সবকিছু উপেক্ষা করে যে গণ রায় ঘোষণা করা হয়েছে, আমরা আশা করব সরকার তাতে সম্মান দেখিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

গণসংহতির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশের মানুষের বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি দিতেই এ হরতাল কর্মসূচি। মানুষ অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমেছে। নতুন ঐক্যের সূচনা ঘটেছে। এ ঐক্য আরও ব্যাপক রূপ লাভ করবে। এ সরকারের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। 

তিনি আরও বলেন, সকালে মিরপুর হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশ আমাদের ৯ নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। তাদের এখনো ছাড়া হয়নি। একইসঙ্গে সারাদেশেও বেশকিছু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। 

ভোরে হরতালে সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে মিছিল বের করেন। মিছিলটি মতিঝিল, গুলিস্তান, বিজয়নগর ঘুরে আবার পল্টন মোড়ে অবস্থা নেয়। এছাড়া পল্টন মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এদিকে বাম জোটের হরতালকে কেন্দ্র করে পুলিশসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পল্টন মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

এএইচআর/আরএইচ