নির্বাচনে জেতার মতো নেতৃত্ব বিএনপির নেই দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা আমাদের জ্ঞানী-গুণী, আঁতেলরাও উল্টাপাল্টা কথা বলেন, তাদেরও বলবো দেশ চালানোর যদি ইচ্ছা থাকে তো মাঠে আসেন। ভোটে নামেন।

বুধবার (১৮ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জিজ্ঞেস করবো, ভ্যাকসিনটা বিনা পয়সায় দিয়েছি। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। সেই ভ্যাকসিন তো এরা নিয়েছে। এটা তো বাদ দেয়নি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। আমাদের টার্গেটেড যারা ছিল, যাদের দেবো আমরা শতভাগ দিয়েছি। বুস্টার ডোজও আমরা শুরু করেছি। তারা তো নিশ্চয়ই দুইটা ডোজ নিয়েছেন, বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। তা আমার হাতে কেনা বিনা পয়সার এই ভ্যাকসিন নিতে পারলো আর আমাদের উন্নয়নটা তাদের চোখে পড়ে না। এখন কী ভ্যাকসিন চোখেও দিতে হবে কী না সেটাই মনে হচ্ছে। তাহলে যদি দেখে। তাছাড়া দেখবে না।

তিনি বলেন, আমি এটাই বলবো, মেগা প্রজেক্ট জনগণের স্বার্থে, জনগণের প্রয়োজনে। বাংলাদেশে যেমন সব ঘর তৈরি করেছি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষ ঘর পাবে। সেটা আমরা করে দিচ্ছি। একটা মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। প্রতি মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা যেটা সংবিধানে আছে সেটা আমরা করে যাচ্ছি। কাজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশের এ উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কি একটা দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবে জনগণের কল্যাণে কোনো কাজ করেছে বা দেশের কোনো উন্নয়ন করেছে বা বিদেশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। তারা তো করতে পারে নাই। বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের জাতি বানিয়ে রেখেছিল। আজকে আমরা মর্যাদাশীল জাতি। আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৯০ ভাগ উন্নয়ন নিজস্ব অর্থায়নে করতে সক্ষম হয়েছি। করোনার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রাখতে আমরা সক্ষম হয়েছি।

সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আমি এটাই বলবো সবাই আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শ মেনে চলবেন। কারণ একটা মাত্র দল, যারা এ দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারে। এই আওয়ামী লীগ সংগঠন জাতির পিতা গড়ে তুলেছেন বলেই তার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল বলেই যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ জাতির পিতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে এ রকম অনেক অপপ্রচার করেছিল, কিন্তু কিছু করতে পারেনি। তারপরই তো তাকে নির্মমভাবে হত্যা করলো। ছোট্ট রাসেলকেও ছাড়েনি। যাতে ওই রক্তের কেউ আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। এটা আল্লাহরই ইচ্ছা ছিল, হয়তো এ কারণেই বেঁচে গিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন সেই আদর্শ নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। আর তার জন্য এটা সম্ভব হয়েছে। একটা আদর্শ সঠিক দিক-নির্দেশনা নিয়ে চললে পরে যে কোনো কঠিন কঠিন কাজ করা সম্ভব, যে কোনো অর্জন সম্ভব। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে এটা ভেবে চলতে হবে যে আদর্শ নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। লাখো শহীদের রক্ত ব্যর্থ হতে পারে না। আর ব্যর্থ হয় নাই। আমরা সেখানে সাফল্য অর্জন করেছি। বাংলাদেশকে যে স্তরে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম সেটা পেরেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজ- এদের হাত থেকে দলকে মুক্ত রাখা, দেশকে মুক্ত রাখা। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর যে দল বেশি কথা বলে যাচ্ছে বিএনপি এদের নেতৃত্ব কোথায়? নেতৃত্ব নাই। সবই তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামি দিয়ে নির্বাচনে জেতা যায় না। নির্বাচনে পরাজয় হবে জেনেই তো তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, কলুষিত করতে চায়। আর যারা আমাদের জ্ঞানী-গুণি আঁতেলরাও উল্টাপাল্টা কথা বলেন, তাদেরও বলবো, দেশ চালাবার যদি ইচ্ছা থাকে তো মাঠে আসেন। ভোটে নামেন। কেউ ভোট কেড়ে নেবে না। আমরা বলতে পারি, আমরা ভোট কেড়ে নিতে যাই না। আমরা জনগণের ভোট পাই। আমরা পাবো। কারণ আমরা জনগণের জন্য কাজ করেছি। সেইজন্যই জনগণ আমাদের ভোট দেবে।

তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে, নৌকায় ভোট দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাংলাদেশের মানুষ পাচ্ছে। নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণেই আজকে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে। কাজেই এই মর্যাদা ধরে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়তে হবে।

এইউএ/এসএম