বাজেটে কর প্রদানের মাধ্যমে পাচারের টাকা দেশে ফেরত আনার প্রস্তাবকে অর্থমন্ত্রী ‘ভালো কাজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। 

মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী সব সময় অর্থ পাচার অস্বীকার করতেন। কিন্তু এবার পাচারকে কেবল স্বীকৃতি দেননি; ভালো কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করতে বাজেট প্রস্তাবের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, কর দিলেই অবৈধ অর্থ বৈধ হয়ে যাবে! এটা থেকে তো দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন হচ্ছে না। বরং দুষ্টের পালন ও শিষ্টের দমন হচ্ছে। এটা সুশাসন বিরোধী। আমরা কখনো সমর্থন করতে পারি না। আমি মনে করি অর্থ পাচারকারীরা কেউ ফেরত আনবে না। বরং পাচার যাতে না হয় এবং পাচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে সঠিক কাজ।

তিনি বলেন, এই বাজেট গতানুগতিক ও উচ্চবিলাসী। বাজেটের সব খাতে ব্যয় বেড়েছে কিন্তু কোনো দর্শন চোখে পড়েনি। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে এই বড় বাজেট অস্বাভাবিক। আমার মনে হয় উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না; বরং এটি আরও বাড়তে পারে।

জি এম কাদের বলেন,বর্তমান সরকারি ঋণের পরিমাণ ১৩ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা। জিডিপির ৩৪ শতাংশের মতো। মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৭৯ হাজার ১০৩ টাকা। বাজেট শেষে ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৬ লাখ ৯ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মাথাপিছু ঋণ হবে ৯২ হাজার ৬৬২ টাকা। মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৩৫ হাজার ২৯৩ টাকা এবং দেশীয় ঋণ ৫৭ হাজার ৩৬৮ টাকা।

জিএম কাদের বলেন, আয় কমেছে ব্যয় বেড়েছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অবনতিশীল। বেকারত্ব বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রা সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখার দিকনির্দেশনা নেই।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ উল্টো দিকে চলছে। সমাধানের দিক নির্দেশনা বাজেটে নেই।

এইউএ/এসকেডি