বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার চেয়ে কোন অংশে ভালো না। সরকার দেশে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুটপাট করছে। আজকে তারা রিজার্ভ থেকে ঋণ নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। অথচ রিজার্ভ থেকে কোনো ভাবেই ঋণ নেওয়ার নিয়ম নেই।

রোববার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রয়াত অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী এক সময় বলেছিলেন লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছি, আজকে জনগণের ওপর আবারও লোডশেডিং আসলো কীভাবে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্বেচ্ছায় মিউজিয়ামে যাওয়া।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আজকে দেশে অর্থনৈতিক সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য প্রকট। স্বাধীন অর্থনীতি নেই। দেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যয়ের মুখে। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা অবৈধভাবে এবং জনগণের ভোট ছাড়াই এসেছে। জনগণের টাকা লুটে বিদেশে পাচার করছে। বিদ্যুৎ খাত থেকে কুইক রেন্টালের নামে অসংখ্য টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এরমধ্যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাশ করা হয়েছে। যাতে কেউ অন্যায় করলেও পার পেয়ে যায়। 

তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। তবে সরকারের দ্বারা কখনোই সেটা সম্ভব না। সরকার ইভিএম ব্যবহার করে আবার জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তবে সেটা এবার সম্ভব নয়। কারণ বিএনপিই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছে। আজকে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকলে দেশের পরিস্থিতি এমন হতো না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদেশে গিয়ে লবিং করা লাগত না। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। সত্যিকারের নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে অনেক বুদ্ধিজীবী সত্যিকারের কথা বলতে পারে না। দেশে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থা। বাকি শুধু রাজপথে নামতে।

তিনি বলেন, এমাজউদ্দীনকে হারিয়ে আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তি একজন অভিভাবক হারিয়েছি। বিএনপি হারিয়েছে একজন সুপরামর্শদাতাকে। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন শুধু শিক্ষকই ছিলেন না। তার চিন্তা ও দর্শন তিনি তার অসংখ্য বইয়ের মধ্যে রেখে গেছেন। তিনি শুধু রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বই লেখেননি। অন্যান্য বিষয়েও তিনি লিখেছেন। তার জ্ঞানের পরিধি ছিল বিশাল। তার পরামর্শ ছিল অমূল্য এবং ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। যা বিরল। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, মরহুম এমাজউদ্দীন আহমদের জীবন শিক্ষা ও গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও জনগণের পক্ষে। তিনি দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যত অনশন করেছে তখনই তিনি পানি খাইয়ে অনশন ভাঙাতেন। তিনি যে আদর্শ ও দর্শন নিয়ে কাজ করতেন আজ তিনি বেঁচে থাকলে সেই চেতনা তিনি সাহসের সঙ্গে তুলে ধরতেন এবং মুখ খুলতেন।

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে  ও ইশতিয়াক আহমেদ বাবুলের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, ছেলে জিয়া আহমেদ, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ। 

আইবি/আইএসএইচ