পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‍মারা যাওয়া ভোলা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরে আলমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে নুরে আলমের জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা নেছারুল হক জানাজা পরিচালনা করেন।

মির্জা ফখরুল ছাড়াও জানাজায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

জানাজার আগে মির্জা ফখরুল জানান, নূরে আলমকে হত্যার প্রতিবাদে ৫ থেকে ৭ আগস্ট সারা দেশে শোক পালন করা হবে। ৬ থেকে ৮ আগস্ট তিন দিন ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। ৬ আগস্ট ছাত্রদল, ৭ আগস্ট কৃষক দল ও ৮ আগস্ট যুবদল ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

আরও পড়ুন: সংঘর্ষে আহত সাবেক ছাত্রদল নেতা আলম মারা গেছেন

তিনি বলেন, পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ— এর চেয়ে বড় যন্ত্রণা, কষ্টের আর কিছু নেই। আমাদের ছেলে নুরে আলম ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি। তাকে গুলি করে হত্যা করেছে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী। গুলি করে হত্যা করেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিমকে। আরও ১৯ জন ঢাকা-বরিশালের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে গত ১৫ বছরে হত্যা-গুমের পথ বেছে নিয়েছে। আজ নতুন নয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একদলীয় শাসন পোক্ত করার জন্য ১৫ বছর ধরে ৬শ নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এখন আর ক্রন্দন নয়, আমাদের জেগে উঠতে হবে। এই ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী জুলুম নির্যাতনকারী সরকারের হাত থেকে এই জাতিকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। শান্তিপূর্ণভাবে গণআন্দোলন শুরু করে নুরে আলম এবং রহিমের হত্যার প্রতিশোধ নেব।

নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার পতন ঘটিয়ে এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

এর আগে বেলা পৌনে ১১টা থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে জড়ো হতে থাকেন দলের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নুরে আলমের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ১টার দিকে নয়াপল্টনে নেওয়া হয়। এরপর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়।

বেলা ১১টায় থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নিলে ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আশপাশের এলাকাগুলোতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। জানাজা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়ক থেকে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এএইচআর/এসএসএইচ