আ স ম আবদুর রব: ফাইল ছবি

‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনা সরকারকে টেকাতে করণীয় সব করতে’- পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সরকারের অবস্থানের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। 

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক ও অমর্যাদাকর’ বলে দাবি করেন তিনি। 

আ স ম আবদুর রব বলেন, আজ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশবাসী স্তম্ভিত। সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার সুগভীর ও দীর্ঘমেয়াদী ‘নীল নকশা’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ করায় জাতি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।  

আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, ভারতকে অনুরোধ করেনি আ.লীগ

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার সেটা করতে তিনি ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। এটা রাষ্ট্রদোহিতার শামিল। কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, অন্য কোনো রাষ্ট্রের অঙ্গ নয়, বা কারো ‘মক্কেল’ রাষ্ট্র নয়।

রব বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ক্ষমতায় থাকা বা না থাকা নির্ভর করে দেশের জনগণের অভিপ্রায়ের ওপর। অন্য কোন রাষ্ট্রের ওপর নয়। ভারতের নিকট পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমতায় টিকে থাকার এই হীন আকুতি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বার্থ ও মর্যাদার পরিপন্থী। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ববিরোধী চক্রান্তে জড়িত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে অযোগ্য হয়ে পড়েছেন। 

আরও পড়ুন: ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

তিনি জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন- ‘কিছুদিন আগে ভারতে এক ভদ্রমহিলা কিছু কথা বলেছিলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে একটি কথাও বলিনি। বিভিন্ন দেশ কথা বলেছে, আমরা বলিনি। এই ধরনের প্রটেকশন আমরা আপনাদের দিয়ে যাচ্ছি।’ উল্লেখ্য, সারা বিশ্বব্যাপী এর প্রতিক্রিয়া হলেও বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের এ বিষয়ে নিরবতা আমাদের জাতির জন্য লজ্জাকর। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা আছেন বলে ভারতের যথেষ্ঠ মঙ্গল হচ্ছে। বর্ডারে অতিরিক্ত খরচ করতে হয় না। ভারতের কয়েক লাখ লোক আমাদের দেশে কাজ করে।’ জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অন্য দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া বাংলাদেশ সরকারের কর্তব্য হতে পারে না। রাতের আঁধারে ভোটবিহীন নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি সরকারের পক্ষেই শুধু এসব সম্ভব। সরকার যে জনগণের ‘সমর্থন ও সম্মতি’ ছাড়াই রাষ্ট্র ক্ষমতা আবারও দখল করার চক্রান্তে লিপ্ত তার ‘ব্লু প্রিন্ট’ উন্মোচিত হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করে বলেন, ‘আমি শিক্ষক লোক, সত্য কথা বলি।’ তাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের অবস্থানের প্রতিফলন। সরকারের এই অবস্থানের কারণে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। নতুবা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে গণজাগরণ অনিবার্য বলে মনে করেন জেএসডি সভাপতি।

এইউএ/এমএ