বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া/ ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্টে কয়েকটি ব্লক ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। তার মধ্যে একটি ব্লক বেশি ক্ষতিকর হওয়ায় সেখানে রিং বসানো হয়। এখন তার হার্টে আরেকটি রিং বসানো হতে পারে বলে একটি সূত্রে ‍জানা গেছে।

গত রোববার (২৮ আগস্ট) খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানো পর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আর কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। সেগুলো পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা পর্যালোচনা করে হার্টে রিং বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। 

যদিও খালেদা জিয়ার হার্টে এখন দুটি ব্লক ধরা পড়েছে, তবু শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আপাতত একটিতে রিং বসানোর পরিকল্পনা আছে চিকিৎসকদের।

আরও পড়ুন : খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত, বৈঠকে বসছে মেডিকেল বোর্ড

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবি এম আব্দুস সাত্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ম্যাডামকে দেখতে গিয়েছিলাম, তার শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। চিকিৎসা চলছে। দোয়া করবেন।

হার্টে রিং বসানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে চিকিৎসকরা চিন্তা ভাবনা করছেন। আগে একটি ব্লকে রিং বসানো হয়েছে। এখন আরও দুটি ব্লক ধরা পড়েছে। সেগুলোতে রিং বসানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ। তাই তাকে দেখতে হাসপাতালে যেতে পারিনি। তবে খবর নিয়ে যতটুকু জেনেছি, তার অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। বেশ কিছু টেস্ট করা হয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে খালেদা জিয়ার, ধরা পড়েছে ব্লক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ এখনো ম্যাডামকে দেখতে যাওয়া হয়নি। তিনি কী অবস্থায় আছেন সেটা এখন বলতে পারছি না।

খালেদা জিয়ার বিষয়ে জানতে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল। যদিও ডা. জাহিদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজা হয়।

করোনা মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে। এরপর কয়েকবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

আরও পড়ুন : খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, খোঁজ রাখছেন রাজনীতির

কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন। এখনো তিনি সেখানেই থাকছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। সে সময় এবং পরবর্তীতে অন্য অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে কয়েক দফায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।

উন্নত চিকিৎসার দাবি করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তে এ সুযোগ নেই উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।

এএইচআর/এসকেডি