সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্যই মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দলের পদ-পদবী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।

তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে গণমাধ্যম, সংসদ ও বিভিন্ন ফোরামে মশিউর রহমান রাঙ্গা সংগঠনের নীতি ও অবস্থান বিরোধী কথা বলছিলেন। এক মাস আগেও এমন একটি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের কাছে ক্ষমা চান মশিউর রহমান রাঙ্গা। তখন সংগঠনবিরোধী কোনো কাজ করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বনানী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রায় এক বছর ধরে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বিদেশে চিকিৎসাধীন। তিনি হঠাৎ করে নভেম্বরে একটি কাউন্সিল ঘোষণা করেছেন। তিনি আহ্বায়ক হয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানদের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল কমিটিতে। অথচ আমরা কেউই এ বিষয়ে কিছু জানি না। আবার যাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে তিনি জাতীয় পার্টির প্রাথমিক সদস্যও নয়।

আরও পড়ুন : আমি দেখে নেব উনি কীভাবে রাজনীতি করেন, জি এম কাদেরকে রাঙ্গা

তিনি আরও বলেন, আবার বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতিতে সংসদের অনেক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে কাউন্সিল আহ্বানের এখতিয়ার বেগম রওশন এরশাদের নেই। তার সঙ্গে কথা হয়েছিল, আমরা তাকে পরের দিন কাউন্সিল আহ্বানের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি এখতিয়ার বহির্ভূত কাউন্সিল আহ্বানের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করেননি। তাই সংসদীয় দলের সভায় রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে পার্টির ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৪ জন মত দেন। ২৩ জন সংসদ সদস্য সভায় উপস্থিত থেকে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন। আরেকজন সংসদ সদস্য বিদেশে থাকায় ফোন করে তার সম্মতির কথা জানিয়েছিলেন। সেই চিঠি চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার স্বাক্ষরে স্পিকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যদি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান চান তবেই মশিউর রহমান রাঙ্গা পার্টির রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন। কারণ কাউকে পার্টিতে ফেরানোর এখতিয়ার শুধুমাত্র পার্টি চেয়ারম্যানের।

কেউ দল থেকে চলে যেতে পারে, তাতে দলের কোনো ক্ষতি হয় না উল্লেখ করে জাপা মহাসচিব বলেন, অনেকেই চলে গেছেন কিন্তু জাতীয় পার্টি তার অবস্থানেই আছে। জাতীয় পার্টি কেউ ভাঙতে পারবে না। জাতীয় পার্টি এখন অনেক শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, এখন গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার সমালোচনা করছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা কিন্তু যখন মহাসচিব ছিলেন তখন এ ধারা নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।

জিএম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা করতে স্পিকারকে দেওয়া চিঠির অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে স্পিকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে স্পিকার  নিজেই বলেছেন, তিনি বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেবেন।

এএইচআর/এসকেডি