বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না মন্তব্য করেন তারা। একই সঙ্গে ওইদিন সম্মেলনের নামে রাজধানীর কোথায়ও কোনো ধরনের নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহানগর নেতারা।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী নূর কমিউনিটি সেন্টারে ‘বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ ৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা-৫ নির্বাচনী এলাকার থানা-ওয়ার্ড ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মী নিয়ে আয়োজিত কর্মী সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, প্রধান আলোচক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, বিএনপিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজপথ দখল করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থেকে তাদের যেকোনো আন্দোলন মোকাবিলা করবে। এদিন বিএনপি-জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মীকে হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারপরও আমাদের সর্তক থাকতে হবে। কারণ এই রাজনীতিক দলগুলো সবসময় চোরাপথের সন্ধানে থাকে। 

১০ ডিসেম্বর যেখানেই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নৈরাজ্য করতে দেখলে সেখানেই তাদের প্রতিরোধ করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।

সভায় গোলাম সারোয়ার কবির বলেন, ১০ ডিসেম্বরের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। এদিন রাজধানীর অলিগলি সবকিছুই সর্তক অবস্থায় পাহারা দেবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। 

তিনি বলেন, আমরা জানি, বিএনপি ও জামায়াত-শিবির চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষের জানমাল ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এদের ব্যাপারে কোনো অনুকম্পা দেখানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, ৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে ৫ লাখ লোকের সমাগম হবে। পরের দিন ১০ ডিসেম্বর আপনারা নিজ নিজ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে অবস্থান নেবেন। খেয়াল রাখবেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কোথাও যেন মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারে। 

এ সময় বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করেন ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার জ্যেষ্ঠপুত্র মশিউর রহমান মোল্লা সজল। তিনি বলেন, জনগণের জন্য রাজনীতি করলে হাঙ্গামা ছেড়ে শান্তির পথে কর্মসূচি দিয়ে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করুন। 

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রীকে দেখুন, দিনরাত অবিরাম দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে তিলে তিলে বিলিয়ে দিচ্ছেন। আজকে তিনি দেশ ছাড়িয়ে সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি মন্দায় অনেক দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় আমরা সেই মন্দার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছি। এরপরও আপনারা দেশের বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাদের শত ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিজবাহুর রহমান ভূঁইয়া রতনের সভাপতিত্বে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফের সঞ্চালনায় কর্মী সভায় বক্তব্যে রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর, ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার জ্যেষ্ঠপুত্র ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনুসহ ঢাকা-৫ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড-ইউনিটের নেতারা। 

বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন ও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি।

এমএসআই/এমএ