বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। সকাল ৭টা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থান করছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা সতর্ক অবস্থান করছেন।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৬টা থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা।

আরও পড়ুন : রাজনীতির খেলায় ফাউল যেন না হয় 

জানতে চাইলে সুজিত রায় নন্দী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না, আমরা অস্থিতিশীলতায় বিশ্বাস করি না। চার দিন আগে রাস্তা দখল করে বসেছিল এবং তাদের উদ্দেশ ছিল তারা (বিএনপি) বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করবে, অস্থিতিশীল করে তারা ভিন্ন পথে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে। এটাই ছিল তাদের (বিএনপির) ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কখনোই টিকতে পারে না। আমরা আওয়ামী লীগ সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং আওয়ামী লীগ যদি অক্ষত থাকে পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই চক্রান্ত করে অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অশুভ শক্তিকে মোকাবিলা করে আমরা সত্য-সুন্দরের বিজয় নিশ্চিত করব। এই বিজয়ের মাসে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের কাছে আওয়ামী লীগ পরাজিত হতে পারে না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, আমরা সহ অবস্থানে বিশ্বাস করি।

আরও পড়ুন : ১০ ডিসেম্বর : কী খেলা হবে? 

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে আগামী দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, এটাই আমাদের সবার কামনা।

সুজিত রায় নন্দী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন— বাঙালি জাতি কখনো মাথানত করে না এবং মাথানত করতে জানে না। আমরা বাংলাদেশকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই যেখানে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান। বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে কটাক্ষ করেছিল আজ সেটা বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ উন্নয়নের, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল। শেখ হাসিনার যে ডায়নামিক লিডারশিপ, এই লিডারশিপ শুধু এই বাংলাদেশে নয় বরং গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখে।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এটা আমার কথা নয়, আজ থেকে ২২ বছর আগে নেদারল্যান্ডসের হেগে শান্তি সম্মেলন হয়েছিল সেখানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব যোগ্যতা রাখেন। কফি আনানের সে কথা আজ প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই করোনা মহামারিতে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো ভালো অবস্থায় ছিল না। কিন্তু আমরা উন্নয়নশীল দেশ হলেও শেখ হাসিনার যোগ্যতা-দক্ষতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং কূটনীতিক প্রজ্ঞার কারণে ভালো অবস্থানে আছি।

সুজিত রায় নন্দী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যে টার্গেট নেওয়া হয়েছে তার অনেক আগেই হবে। সেই জন্য আমরা চাই সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে অবস্থান করছেন নেতাকর্মীরা। তিনি সকাল ৭টা থেকে সেখানে অবস্থান করছেন। জানতে চাইলে এই কাউন্সিলর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সকাল ৭টা থেকেই অবস্থান করছি। বিএনপি যেকোনো সময় বিশৃঙ্খলা করতে পারে, তাই আমাদের অবস্থান। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। বিএনপির সব নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে।

যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুক বা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করে সমাবেশ করুক তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে, বোমাবাজি-অগ্নিসন্ত্রাস করলে সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য যুবলীগ প্রস্তুত রয়েছে। এটা শেখ পরশের নির্দেশ।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আজ বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো অপতৎপরতা রুখতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও বদ্ধপরিকর। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে এগিয়ে চলা তা যেন কোনো অপশক্তির ভয়াল থাবায় থমকে না যায় সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক অবস্থান থাকবে।

এমএসআই/এসএসএইচ/