দেশ ও দেশের মানুষকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির হাত থেকে বাঁচাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)।

তিনি বলেছেন, ৯১ সালের পর থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা ক্ষমতায় যাচ্ছে তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দলবাজি ও টেন্ডারবাজি করে আঙুল ফলে কলাগাছ হচ্ছে। দেশের হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে।

বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে উপদেষ্টা এবং পার্টির ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

যারা ক্ষমতায় থাকে তারা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতি করে মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সরকার দলীয়দের বিরুদ্ধে কোনও আইন নেই, আইন শুধু বিরোধীদের জন্য প্রয়োগ হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের হাত থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা বিএনপির হাতে গেলে শুধু কালেক্টর পরিবর্তন হবে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, এতে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দেশের জনগণ জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই দলকে সুসংহত করতে হবে।

নোয়াখালীর বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গত রাতেও একজন খুন হয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, প্রায় ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাদের দল একটাই, নেতাও একজনই। শুধু ভাগাভাগির কারণেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। দেশের মানুষ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। আমরা দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে রাজনীতি করছি।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনও দলই জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়নি। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে জাতীয় পার্টিকে লাঠিপেটা করেছে, আর আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ভেঙে দুর্বল করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। দুর্নীতি, লুটপাট আর বৈষম্য সৃষ্টি করে দেশের সুশাসন ধ্বংস করেছে দুটি দল।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু বৈষম্য থেকে মুক্তি পাইনি।

জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো কলুষিত করেছে বর্তমান সরকার। বিএনপি দুর্নীতি ও দুঃশাসনের যে অপরাজনীতি শুরু করেছিল বর্তমানে আওয়ামী লীগ তা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। দেশে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই, দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে না।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ প্রমুখ।

এএইচআর/জেডএস