বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি (ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ৫৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্বাচন কমিশনে পাঠানো এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম-সচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান জানান, ঠাঁকুরগাও-৩ আসনে ৬ জন, বগুড়া-৪ আসনে ৯ জন, বগুড়া-৬ আসনে ১৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ৬ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ১৩ জন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।  

মনোনয়ন জমা দিলেন যারা:

ঠাকুরগাঁও-৩: মো. সিরাজুল ইসলাম, বিএনএফ; হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জাতীয় পার্টি; গোপাল চন্দ্র রায়, স্বতন্ত্র; মো. ইয়াসিন আলী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি; মো. শাফি আল আসাদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও মো. এমদাদুল হক, জাকের পার্টি। 
 
বগুড়া-৪: একেএম রেজাউল করিম তানসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ; শাহীন মোস্তফা কামাল, জাতীয় পার্টি; আব্দুর রশিদ সরদার, জাকের পার্টি; মো. তাজ উদ্দীন মন্ডল, বাংলাদেশ কংগ্রেস। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মো. গোলাম মোস্তফা, মো. ইলিয়াস আলী, মো. আশরাফুল হোসেন আলম, মো. কামরুল হাসান সিদ্দিকী (জুয়েল) ও মো. আব্দুর রশিদ।

বগুড়া-৬: মো. আফজার হোসেন, গণফ্রন্ট; মো. এমদুদুল হক ইমদাদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ; মো. নূরুল ইসলাম ওমর, জাতীয় পার্টি; রাগেবুল আহসান রিপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক, জাকের পার্টি; মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন; মো. মনসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেস। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মো. আব্দুল মান্নান, সৈয়দ কবির আহম্মেদ, মো. রাকিব হাসান, মাছুদার রহমান হেলাল, মো. আশরাফুল হোসেন আলম ও মো. সরকার বাদল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২: মু. জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; মো. নবীউল ইসলাম, বিএনএফ; মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টি; মো. গোলাম মোস্তফা, জাকের পার্টি; মু. খুরশিদ আলম, স্বতন্ত্র; এবং মোহাম্মদ আলী সরকার, স্বতন্ত্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: মো. আব্দুল হামিদ, জাতীয় পার্টি; জহিরুল ইসলাম জুয়েল, জাকের পার্টি; মো. রাজ্জাক হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি; স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মো. আশরাফ উদ্দিন, অ্যাড. মো. জিয়াউল হক মৃধা, আবদুস সাত্তার ভূঞা, আবু আসিফ আহমেদ, মাহবুবুল বারী চৌধুরী, মো. মঈন উদ্দিন, মো. আব্দুর রহিম, মো. শাহজাহান আলম, শাহ মফিজ ও মোহন মিয়া। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩: মো. আব্দুল ওদুদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; মো. মুনিরুজ্জামান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ; কামরুজ্জামান খাঁন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ; মো. সামিউল হক, স্বতন্ত্র; তাহারিমা, স্বতন্ত্র; এবং মো. মোস্তাফিজুর রহমান (মুকুল)।

ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিলো ৫ জানুয়ারি, বাছাই ৮ জানুয়ারি, প্রত্যাহার ১৫ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ করা হবে ১ ফেব্রুয়ারি।

গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলপবাগ মাঠে আয়োজিত সমাবেশ থেকে বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগ করার ঘোষণা  আসে। এর পরদিন রোববার (১১ ডিসেম্বর) সশরীরে পদত্যাগপত্র নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন পাঁচজন এমপি। শারীরিক অসুস্থতা ও বিদেশে অবস্থান করায় বাকি দুইজন যেতে পারেননি। পরে সেখান থেকে ছয়জনের আবেদন গ্রহণ করে সংসদ সচিবালয়। এরপর সেদিনই ছয়টি আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এরপর ১৮ ডিসেম্বর সংরক্ষিত নারী আসন ছাড়া বাকি শূন্য হওয়া পাঁচ (ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) আসনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির ঘোষণা অনুযায়ী, ওই পাঁচটি আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৫ জানুয়ারি, বাছাই ৮ জানুয়ারি, প্রত্যাহার ১৫ জানুয়ারি ও ভোটগ্রহণ করা হবে ১ ফেব্রুয়ারি।

২২ ডিসেম্বর স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুন। সেদিনই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়ের রেজিসলেটিভ সাপোর্ট উইংয়ের আইন প্রণয়ন শাখা-২ এর সচিব কেএম আব্দুস সালামের সই করা গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদে থাকা বিএনপির সাতটি আসন শূন্য হয়।

হারুনের পদত্যাগ করার চারদিন পর ২৬ ডিসেম্বর আগের পাঁচ আসনের তফসিলের সঙ্গে একই দিন রেখে এই শূন্য আসনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সবগুলো আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হবে বলেও জানায় ইসি।

এসআর/কেএ