স্বৈরতন্ত্র আর সুশাসনের অভাবের কারণে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। তিনি বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে যা চলছে তাতে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। নোয়াখালীর বসুরহাটের মতো সারাদেশেই অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতাই দেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এনায়েতুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন দলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী জিএম কাদেরের হাতে ফুল দিয়ে জাপায় যোগ দেন।

দেশে নির্ভেজাল গণতন্ত্র জরুরি হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ১৯৯১ সালে পল্লীবন্ধু রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তরের পর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র চলছে। বিএনপি ক্ষমতায় বসে দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে, যা এখনও চলছে।  

তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানীদের বৈষম্যের প্রতিবাদে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। এখন ক্ষমতাসীন দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা-বাণিজ্য করা যায় না। ক্ষমতাসীনরা টেন্ডারবাজি, দলবাজি, চাঁদাবাজি করে দেশের মানুষের শান্তি হরণ করেছে। ৯১ সালের পর থেকে শুধু লুটপাটের রাজনীতি শুরু হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির টেন্ডারবাজি, দলবাজি, দুর্নীতি, দুঃশাসন, বৈষম্য আর নির্যাতনে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা ভুলণ্ঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মূল্যায়ন করলে মনে হচ্ছে ৯১ সালের পর থেকে দেশের মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পাচ্ছে না।

এ সময় সবাইকে জাতীয় পার্টির পতাকাতলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান জিএম কাদের।

জাপার মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, জেলেরা বাজারে মাছ বিক্রি করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে চাঁদা দিতে হয়। রাস্তায় হকাররা দোকান করতে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগকেও চাঁদা দিতে হয়। দেশের মানুষ ভালো নেই। ১৯৯১ সালের পর বিএনপি হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে যে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের চালু করেছিল, তা গত ১২ বছরে আরও সম্প্রসারিত হয়েছে।

কার্টুনিস্ট কিশোর আর লেখক মুশতাককে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়েছে দাবি করে জাপা মহাসচিব বলেন, মুশতাক কারাগারেই মারা গেছেন। দেশে আইনের শাসন নেই তাই প্রতিদিন ধর্ষণ হচ্ছে, কিন্তু নির্যাতিতরা বিচার পাচ্ছে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নাজমা আকতার, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, ড. নুরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক ও জাপার চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী প্রমুখ।

এএইচআর/জেডএস