চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বাতিলের দাবি ইসলামি আন্দোলনের
চলতি শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক বাতিলের দাবি জানিয়েছে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ। রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
লিখিত বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পাঠ্যসূচির অধিকাংশ অধ্যায়ে আদিম সভ্যতা, হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের শাসন ইতিহাস এবং নগরায়ণের কথা বলা হয়েছে এবং শেষের অধ্যায়ে অল্প পরিসরে সুলতানি আমলের ইতিহাস আলোচিত হয়েছে। বাংলায় প্রায় ৬০০ বছরের মুসলিম শাসনকে আগেকার মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্য, সেন, পাল আমল এবং পরের ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : যে কথা বইয়ে নেই তা নিয়ে গুজব চালানো হচ্ছে
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, হিন্দুধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ বেদকে এক ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। পাল ও সেন আমলকে ইতিহাসের প্রাচীন যুগ বলে মুসলিম শাসনকে বহিরাগত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সুলতানি শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হিসেবে জবরদখল করে শরীয়াহ আইন প্রতিষ্ঠা, একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক সুবিধাজনক অবস্থান, বর্ণভেদ চালু করা, নারীদের শোচনীয় অবস্থা ইত্যাদি বিষয় চিত্রায়ন করা হয়েছে ।
বিজ্ঞাপন
ইসলামি আন্দোলনের এ আমির বলেন, স্বদেশী আন্দোলন এবং ক্ষুদিরাম, সূর্য সেনদের সশস্ত্র আন্দোলনের কথা এসেছে। বাংলার ইসলামি আন্দোলনের একমাত্র উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে নবম-দশম শ্রেণির “ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” বইতে। সেখানেও বৈষম্যটা স্পষ্ট। ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের আন্দোলন, খিলাফত আন্দোলন এক এক পৃষ্ঠা করেও আলোচনা পায়নি।
ক্ষমতাসীন সরকারে সমালোচনা করে রেজাউল করিম বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাঠ্যপুস্তকের বিকৃতি ঘটানো ও ইতিহাস থেকে মুসলমানদের মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ভবিষ্যতে আমাদের কোনো বইয়ে আর ভুল থাকবে না : শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, এ বই সংশোধন না বরং বাতিল করতে হবে। সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও ওলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সঙ্গে এ বই রচনার সঙ্গে জড়িতদের ভিন্ন কোন রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রেসিডিয়াম সদস্য মাও. সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাও. গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।
ওএফএ/এসকেডি