বিশ্ব মানব ভ্রাতৃত্ব দিবসে ‘১০ দফা দাবি’ আদায়ে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। আর রাজধানীতে যুগপৎভাবে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। এই সমাবেশে থেকে আগামী দিনের জন্য গণ-পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি এককভাবে দিনব্যাপী পুরো রাজধানীতে গণসংযোগ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চ। 

দলগুলোর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি। এতে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

আরও পড়ুন>>যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি-গণতন্ত্র মঞ্চ

বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এতে উপস্থিত থাকবেন গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক সাত দলের শীর্ষ নেতারা থাকবেন। বিজয়নগর পানির ট্যাংক পাম্প সংলগ্ন এলাকায় বেলা ১১টায় সমাবেশ করবে ১২ দলীয় জোট। এতে অংশ নেবেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতারা। 

বিকেল ৪টায় পূর্ব পান্থপথে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)। এছাড়া যুগপৎ এই কর্মসূচি পালন করবে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরাম-পিপলস পার্টি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

বিএনপির নেতারা বলছেন, শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ যুগপৎভাবে পালন করবে বিএনপিসহ সরকারের বিরোধী দলগুলো। আর ওইদিন এককভাবে সারাদেশে সমাবেশ কর্মসূচি পালন কববে বিএনপি। এজন্য ইতোমধ্যে বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিতে শহরগুলোতে চলে গেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। 

আরও পড়ুন>>যুগপৎ আন্দোলনে ১৪ দফা ঘোষণা গণতন্ত্র মঞ্চের

দলটির নেতারা বলছেন, কালকের সমাবশে থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি দেওয়া হবে। এই কর্মসূচি রাজধানীসহ সারাদেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে পালিত হবে। এরপর সেটা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। যদিও পদযাত্রার কর্মসূচির তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে ফেব্রুয়ারির ১৯ অথবা ২০ তারিখে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। কালকে সেখানকার জনসভায় থাকব। 

কর্মসূচির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, কর্মসূচি তো অবশ্যই দেওয়া হবে। তবে কি কর্মসূচি বা কোন তারিখে দেওয়া হবে সেটা এখনও জানি না।

আরও পড়ুন>>বিএনপির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বেকায়দায় সঙ্গীরা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালকের সমাবেশ থেকে যুগপৎ কর্মসূচি হিসেবে ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী গণ-পদযাত্রা কর্মসূচি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শরিকদের পক্ষ থেকেও এই কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তাবনা ছিল। 

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব দিবস। এদিনে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

তিনি জানান, বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিতে ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা চলে গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজশাহীতে মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে আব্দুল মঈন খান, চট্টগ্রামে নজরুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটে বেগম সেলিমা রহমান, ফরিদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও রংপুরে থাকবেন মোহাম্মদ শাহজাহান। 

আরও পড়ুন>>আন্দোলন নস্যাৎ করতে সরকার বিভিন্ন গল্প তৈরি করবে : ফখরুল

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, ১১ ফেব্রুয়ারি এককভাবে রাজধানীর একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গণসংযোগ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। সেটা মিরপুর-১২ থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকায় গিয়ে শেষ হবে। বিএনপিকেও এককভাবে কর্মসূচি পালনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তবে ১১ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচি ছাড়াও কালকের সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য একটি কর্মসূচি ঘোষণা করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের জোটের পক্ষ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে গণসংযোগ ও পদযাত্রা কর্মসূচি দেওয়া হবে। আর কালকের সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। তবে সেটা এখনও ঠিক করিনি।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালকে আমরা ও  পিপলস পার্টি যৌথভাবে বিকেল ৪টায় আরামবাগ সমাবেশ করব। সেখান থেকে যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে ধীরে-ধীরে এই আন্দোলনকে সারাদেশে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া। 

এএইচআর/কেএ