জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে আর কোনো বাধা থাকছে না—এমন আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে এই আদেশ এখনো হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন জিএম কাদের। 

তিনি বলেন, আমি এখনো নিশ্চিত নই। কারণ রায়ের কপি এখনো হাতে পাইনি, অপেক্ষায় আছি। 

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আব্দুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা পোস্টকে এ কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, পরবর্তীতে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যাবে কি না, সেটাও জানি না। এতদিন কীভাবে এই মামলা চলল, সেটাও জানি না। কারণ এটা তো কোনো লজিক্যাল জিনিস ছিল না। তারপর এটা যেহেতু আদালতের বিষয়, তাই আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। 

আরও পড়ুন>>জিএম কাদের জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন

গত বছরের ৪ অক্টোবর পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করা হয়। বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন জাপার বহিষ্কৃত নেতা ও দলটির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।

মামলায় বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন জাপার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরপর হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন বিবাদী জিএম কাদের। 

চেয়ারম্যান হওয়ার পর গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মার্চ জাপার গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। এছাড়া গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। অন্যদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাপার কাউন্সিলসহ গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট ১৫০৫১/২০১৯ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়।

জিয়াউল হক মৃধার এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ অক্টোবর জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। 

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন শেখ সিরাজুল ইসলাম ও কলিম উল্যাহ মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। ২৪ নভেম্বর আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য জেলা জজ আদালতে মিস আপিল দায়ের করা হয়। সেই আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। পরে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। 

কিন্তু পরদিন বাদীপক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। ফলে তখন পর্যন্ত নিম্ন আদালতের আদেশ বহাল থাকে। 

এএইচআর/কেএ