মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন / ফাইল ছবি

অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।

রোববার এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। এরপর নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম দাখিল করেন ওবায়দুল কাদের। পরে নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফও করেন কাদের।

বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান শেখ হাসিনা এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য।

১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন। তিনি ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারাবরণ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের  সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে সন্তানের বাবা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।

এদিকে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাষ্ট্রপতি পদে একজন প্রার্থী হলে, নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হবে না।

এমএসআই/এমজে