আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ফখরুল সাহেব, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার কারা করেছে? ভোট চুরির অপবাদ আওয়ামী লীগকে দেবেন না। ভোট চুরির মহারাজা বিএনপি।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে এক নেতা ব্যালট চুরি করতে গেছেন। ব্যালট চুরি করে নির্বাচনে জিতবেন, এজন্য সকালে আদালতে হামলা করেছেন। ভোট পণ্ড করতে বার বার আদালতে হামলা করছেন; ফখরুল সাহেব, আপনারা ধরা পড়ে গেছেন।

বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী জানুয়ারিতে নির্বাচন। নির্বাচন খুব দূরের বিষয় নয়। নির্বাচন আমাদের মূল বিষয়। নির্বাচন ঠেকাতে অনেকে নানা তৎপরতায় আছে। বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনে খারাপ কিছু ঘটলে আওয়ামী লীগ দায়ী থাকবে। তার মানে বিএনপি খারাপ কিছু করতে চায়। তারা নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। হেরে যাওয়ার ভয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা। নির্বাচনে খারাপ কিছু ঘটানোর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। এটা ২০১৩-১৪ নয়, জনগণ ভয় পায় না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। আজকে বাংলাদেশে এমন কোনো ঐক্যবদ্ধ দল নেই যারা নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারাতে পারে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন বর্জন করে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে তারা হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অর্জন এবং তার ব্যক্তিগত সততা, পরিশ্রম বাংলাদেশের মানুষকে, ভোটারদের এতটাই মুগ্ধ করেছে যে, আজকে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ের কোনো সুযোগ নেই।
 
তিনি বলেন, ভোট চুরি আওয়ামী লীগ করে না। আওয়ামী লীগ যদি এ দেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করত, আপনাদের বিজয়ী হওয়ার কথা ছিল না। এর আগে ৯১ তে জিতেছেন। ২০০১ সালে ছলচাতুরী করে কীভাবে জিতেছেন, আবারও ১/১১, আজকে বিজ্ঞাপন দিয়ে পুরনো সেই সুরে কে যেন ডাকে। সেই ১/১১ বিরাজনীতি করণের যে অশুভ তৎপরতা, সেই বিরাজনীতি করতে আবার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে হটানোর জন্য আবারও বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সামনের দিনগুলো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, অত্যন্ত কঠিন। আমি সবাইকে আহ্বান করব, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে হারাতে পারে বাংলাদেশে এমন কোনো ঐক্যবদ্ধ দল নেই। যেকোনো অবস্থায়, যেকোনো পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেলবেন না, এতে নিজেরাই পুড়ে যাবেন। স্বাধীন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা আমরা যেকোনো মূল্যে অব্যাহত রাখব। বিএনপির নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলতে চাই, গণতন্ত্রের ট্রেন নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় না পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আপনারা নির্বাচনে আসতে চাইলে আসবেন, না আসতে চাইলে আসবেন না। আপনাদের জন্য দেশের সার্বিক অগ্রগতি থেমে থাকবে না। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা কারো জন্য অপেক্ষা করবে না।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা মহিউদ্দিন জালাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, অর্থ ও পরিকল্পনা  বিষয়ক সম্পাদক ওয়াশিকা আয়শা খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএসআই/এসকেডি