বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে আগামীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা বাধা দেবে তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আর এই বাধাদানকারী হলো আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়, আজ বিদেশিরাও তাই মনে করছে। তারাও দাবি তুলেছে সুষ্ঠু নির্বাচনের।

শনিবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীন আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না বলে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনরত কোনো দল এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেবে না।

তিনি বলেন, আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে আগামীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা বাধা দেবে তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আর বাধাদানকারী হলো আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগের কাছে গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণ কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। এরা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ দেশে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশাবাদী, জনগণ প্রস্তুত, অচিরেই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়ে যাবে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। তারা গায়ের জোরে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী বাধা দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, আজ সারা পৃথিবীতে সবাই জেনেছে, শেখ হাসিনার অধীনে একটিও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগও ভালো করে জানে, জনগণ দিনের বেলায় ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

মানুষের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগ হরণ করেছে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অর্থনীতি আর মেরামত করা সম্ভব নয়। আজ গরিব মানুষ না খেয়ে আছে, মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে গেছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এ সরকার সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেশের আকাশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি; ঝড় আসছে, এই সরকার উড়ে যাবে। শেখ হাসিনাকে জেলখানায় যেতেই হবে, কোনো রক্ষা নেই। শেখ হাসিনার সূর্য ডুবে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজ রাজপথে লাখ লাখ যুবক নেমে এসেছে, এ যুবকদের পদভারে শেখ হাসিনা সরকার বানের জলে ভেসে যাবে। আমার এক পরিচিত সরকারি চাকরি করা লোককে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দিচ্ছে না, পরে জানতে পারলাম সেই লোক সরকারের অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, আজ সারা পৃথিবীর মানুষ আপনাদের ভিসা দিচ্ছে না। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ আপনাদের মতো চোর-বাটপারদের ভিসা দেবে না। গত ১৪ বছরের আপনাদের সব অপকর্মের বিচার হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা (সরকার) মাইনকা চিপায় পড়ে গেছেন, আপনাদের আর বাঁচার সুযোগ নেই। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ধারণ ক্ষমতা ৪ হাজার ২০০, কেরানীগঞ্জে ১৬ হাজারের মতো, সারা দেশে ২ লাখ। আর সারা দেশের জেলগুলোতে শুধু আমাদেরই কর্মী আছে কয়েক লাখ।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

এএইচআর/এসএসএইচ/